মোবাইল ফোন এখন আমাদের অল্টার ইগো। একটা সময়ে মানুষ গোপন কথা লিখে রাখত ডায়েরিতে, আর খুব চেষ্টা করত তা সবার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখার। ফোন কিন্তু অনেকটা সেরকমই।
আপনি কার সঙ্গে কথা বলেন, কতক্ষণ বলেন, কী ভাবেন, কোন ধরনের খবরে কীভাবে রিঅ্যাক্ট করেন, কোন কোন বিষয় জানতে চান তো বটেই, আপনার ব্যাঙ্ক লেনদেন বা সারাদিনের কর্মকান্ডের হিসেব পেতে গেলে স্রেফ ফোনটা হাতিয়ে নেওয়াই যথেষ্ট!
অনেকে বলবেন, ‘তা জানুন না মশাই… আমি কি চোর না বাটপাড় যে তথ্য গোপন রাখতে যাবো?’ ব্যাপারটা কিন্তু অতই সহজ না। ফোনের তথ্য হাতিয়ে নিয়ে আপনাকে যে কেউ ব্ল্যাকমেল করতে পারে, ব্যাঙ্ক ফ্রড হতে পারে, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে – তাই তাকে নিরাপত্তার বাঁধনে মুড়ে দিন।
. ফোনে এমন পাসওয়ার্ড রাখুন, যা চট করে কেউ আন্দাজ করতে পারবে না। ফোন হ্যাক হলেও তথ্য বেহাত হতে সময় লাগবে। যাঁরা পাসওয়ার্ড মনে রাখতে পারেন না, তাঁরা কী করবেন? ফোনে প্যাটার্ন লকের ব্যবস্থা রাখুন।
. প্লে স্টোর থেকে কেবলমাত্র নিরাপদ অ্যাপই ডাউনলোড করুন। যেখানে পাইরেটেড সিনেমা দেখা বা বই পড়া যায়, সেগুলি এড়িয়ে চললেই ভালো করবেন কারণ এই সব অ্যাপের আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পারে বিপদের আশঙ্কা। অ্যাপ নামানোর সময় রেটিং দেখুন অবশ্যই।
. অ্যাপ আপনার ফোনের কোন কোন তথ্য অ্যাকসেস করবে, তা আগে জেনে নিন। ধরুন কোনও গ্রসারি অ্যাপ আপনার ফোনের ক্যামেরার অ্যাকসেস চাইছে – সেই অ্যাপটি নিরাপদ কিনা বুঝবেন কীভাবে? যুক্তি দিয়ে ভাবুন, তার পর সিদ্ধান্ত নিন। গ্রসারি অ্যাপ আপনার লোকেশন অ্যাকসেস চাইতে পারে, কিন্তু ফোন ক্যামেরা দিয়ে তার কী কার্যসিদ্ধি হবে? কোনওরকম সন্দেহ থাকলে অ্যাপ নামাবেন না।
. জানেন কি, মোবাইল ওয়ালেট বা অনলাইন শপিং অ্যাপগুলি আলাদাভাবে লক করে রাখা যায়? যাঁদের বাড়ির বাচ্চারা বাবা-মায়ের ফোনে গেম খেলে, তাঁদের এই ডাবল লকিং পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া উচিত। বহু থার্ড পার্টি অ্যাপ পাওয়া যায়, প্লে স্টোর থেকে তেমনই একটি ডাউনলোড করে রাখুন।
. আপনার ফোনে ভালো অ্যান্টি ভাইরাস আছে তো? বিশেষ করে যাঁরা ফোনের মাধ্যমে জরুরি মেল বা ব্যাঙ্কের দরকারি কাজকর্ম সারেন, তাঁদের কাছে ভালো একটা অ্যান্টি ভাইরাস থাকা একান্ত জরুরি।
. পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহার করবেন না, ব্লু টুথ ব্যবহারের ক্ষেত্রেও সাবধান। আমাদের পরামর্শ হচ্ছে, ব্যবহার না করলে ওয়াইফাই ও ব্লু টুথ বন্ধ করে রাখুন। কোনও পাবলিক ওয়াইফাই ১০০% নিরাপদ নয়।