একটা বাইক বা গাড়ি কেনার ইচ্ছে অনেকদিনের? কোভিড সংক্রান্ত ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার পর ভাবছেন লোন নিয়ে একটা গাড়ি কিনেই ফেলবেন? ইচ্ছে পূরণ করেই ফেলুন, তবে লোন নেওয়ার সময় কতগুলো বিষয় মাথায় রাখা উচিত। বিশেষত গাড়ির লোনে কিন্তু আপনি ট্যাক্স ছাড় বা তেমন কোনও সুবিধে পাবেন না, উলটে তেলের ও গাড়ির দেখভালের খরচ বাড়তেই থাকবে। তবে হ্যাঁ, যাতায়াতের সুবিধে আর স্বাধীনতা বাড়বে – তা অনস্বীকার্য। আর নিজেরা চালাতে পারলে তো কথাই নেই!
ডাউন পেমেন্ট কত করবেন?
এমন গাড়ি কিনুন যার ২০% ডাউন পেমেন্ট দেওয়ার ক্ষমতা আপনার আছে। তা না হলে বিরাট লোনের বোঝা মাথায় চেপে থাকবে, পকেটের উপর বাড়তি চাপ পড়বে। দরকারে কয়েক মাস অন্য খরচে রাশ টেনে থোক টাকা জমিয়ে নিন। স্রেফ গাড়ির ডাউন পেমেন্টের জন্যে একটা রেকারিং ডিপোজিট করেও টাকা জমিয়ে নিতে পারেন। অনেক সংস্থাই হয়তো বলবে যে তারা ১০০% ফাইনান্স জোগাবে, কিন্তু সেই ফাঁদে পা দিলে আপনিই আখেরে ভুগবেন।
লোনের সুদের হার কত?
এখন ইন্টারনেটে একটু খোঁজাখুঁজি করলেই নানা সংস্থার লোনের হার বিষয়ে তুল্যমূল্য আলোচনা পাবেন – সে সব দেখে তবেই সিদ্ধান্ত নিন কী করবেন। অনেক কোম্পানি বা ব্যাঙ্ক গাড়ির লোনে সুদের হার কম রেখে প্রসেসিং ফি বাড়িয়ে দেয় – তাই নিয়মকানুন খতিয়ে দেখে নেওয়া ভালো। আপনার ডাউন পেমেন্ট কত, ক্রেডিট স্কোর (অর্থাৎ আগে ধার নিয়েছেন এবং মিটিয়েছেন কিনা, ক্রেডিট কার্ড কীভাবে খরচ করেন ইত্যাদি) কেমন, কত টাকা রোজগার, অন্য লোন আছে কিনা ইত্যাদি বিষয়ের উপর লোনের হার বেশি বা কম হতে পারে।
কত দিনের জন্য লোন নেবেন?
চেষ্টা করুন আপনার লোন বছর চারেকের মধ্যে মিটিয়ে দেওয়ার। অনেক সংস্থা সাত বছরের মধ্যে লোন মেটানোর সুযোগ দেয়, তাতে ইএমআই কম পড়লেও বেশি সুদ গুনতে হবে। তাই যত তাড়াতাড়ি লোন মিটিয়ে দিতে পারেন, ততই ভালো। চার-পাঁচ বছর পরে আপনার গাড়ির বিক্রয়মূল্যও অনেকটা কমে যাবে। আর হ্যাঁ, সময়ের আগে যদি আপনি লোন শোধ করে দিতে চান, পারবেন তো? অনেক সংস্থাই কিন্তু ফোরক্লোজ করতে চায় না। তাই এ বিষয়টা খতিয়ে দেখে নেবেন।
লোন এগ্রিমেন্ট ভালো করে পড়ে নেবেন
খুব ভালো করে লোনের কাগজপত্র পড়ে নেওয়া দরকার, সেই সঙ্গে জেনে নিন গাড়ির কোম্পানির সঙ্গে আপনি যে সংস্থার লোন নেবেন তাদের সম্পর্ক কেমন। আপনার অজান্তেই লোনের রেট বাড়াবে না তো সংস্থা? অসতর্ক হলে এই সব বিষয়ে সমস্যা হতে পারে। ভালো করে এগ্রিমেন্ট পড়ে তবেই বেছে নিন আপনি ফ্লোটিং রেটে ঋণ নেবেন, না ফিক্সড।
গাড়ির লোন নিতেই হবে এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই – কোনও বিমা বা সোনা জমা রেখেও টাকা ঋণ নেওয়া যায়। তেমন উপায় থাকলে অবশ্যই ট্রাই করে দেখুন।