অনলাইনে যা পোস্ট করবেন, তা রয়ে যাবে দেওয়ালে। এমনকী, আপনি ডিলিট করলেই তা মুছে যাবে না – অন্য কারও কাছে তার স্ক্রিনশট থাকতেই পারে। তাই মাথা গরম করে বা নেহাত ব্যক্তিগত রাগ বা ঈর্ষা উগরে দেওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করা উচিত নয়। দরকারে ফোন তুলে কথা বলুন, মুখোমুখি ঝগড়া করুন, কিন্তু সোশাল মিডিয়ার পাতায় তা করবেন না। দুম করে কারও ছবি দেখে রাগ হল আর দু’কথা শুনিয়ে দেওয়ার লোভ সামলাতে পারলেন না – এমন বারবার হতে থাকলে কিন্তু লোকে আপনাকেই তির্যক কথা শুনিয়ে যাবে।
আপনি মানুষটা যেমন, তার প্রকাশ হওয়া উচিত সোশাল মিডিয়ায়। নিজের পছন্দমতো লেখা বা ছবি পোস্ট করতে পারেন। অন্য কারও লেখা শেয়ার করতেও কোনও বাধা নেই, তবে অবশ্যই জানিয়ে দেবেন কোথা থেকে সংগ্রহ করেছেন। কারও দেওয়াল থেকে লেখা কপি করে নিজের পাতায় পেস্ট করে চালিয়ে দিলে কিন্তু বদনাম হবে। চৌর্যবৃত্তির দায়ে পড়বেন। যাঁরা লেখালিখি করেন, তাঁরা এ বিষয়ে আরও সাবধান থাকুন। ধন্যবাদ জানানো, প্রশংসা করা, অনুমতি নেওয়ার মতো বিষয়গুলো প্রাসঙ্গিকতা হারায় না কখনও।
সহবত ভুলবেন না কোনও অবস্থাতেই। মনে রাখতে হবে, যে মুহূর্তে আপনি আপনার মতামত পাবলিক ফোরামে রাখছেন, সেই সময় থেকেই সমালোচনার মুখোমুখি দাঁড়ানোর মানসিক প্রস্তুতি থাকা উচিত। আপনার মতের সঙ্গে সবার মিলবে না, সেটাই স্বাভাবিক। তর্ক করুন যুক্তি দিয়ে, অযৌক্তিক কথা বললেই ঝগড়া হয়।
কারও সঙ্গে মুখোমুখি মতের অমিল হলে আপনি কী করতেন? ঠিক সেই ব্যবহারটাই বহাল রাখুন সমাজ মাধ্যমেও। একবার মাথা গরম প্রমাণিত হয়ে গেলে কিন্তু আপনার গ্রহণযোগ্যতাও কমতে আরম্ভ করবে। ক্রমশ আমাদের কাজের ক্ষেত্রগুলো যুক্ত হয়ে যাচ্ছে সোশাল মিডিয়ার সঙ্গে – সেখানে জাজমেন্টাল বা মুখরা তকমা গায়ে লেগে যাওয়াটা মোটেই বাঞ্ছনীয় নয়।
কোনও বন্ধু বা কানেকশনকে হেলাফেলা করা উচিত নয়। তবে তারও আগে, বন্ধু নির্বাচনের আগে একটু ভাবনা-চিন্তা করুন। ধীরে ধীরে তাঁদের সঙ্গে আদানপ্রদান বাড়ান। মাঝে সাঝে হাই-হ্যালো বলা, তাঁদের পোস্টে লাইক দেওয়া, তেমন কিছু পছন্দ হলে শেয়ার করা দরকার, তাতে যোগাযোগ বহাল থাকে। মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলাটাই ছিল সোশাল মিডিয়ার প্রাথমিক উদ্দেশ্য, সেই ব্যাপারটাকে ছোতো করে দেখবেন না।
একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়গুলিকে সোশাল মিডিয়ার পাতায় না দেওয়াই ভালো। ব্যক্তিগত পরিসরে যত বেশি মানুষকে ঢোকাবেন, তত ভিড় বাড়বে আপনার জীবনে। হয়তো সাময়িক কিছু লাইক পাবেন, কিন্তু ট্রোলিংয়ের শিকার হওয়ার আশঙ্কাও থেকে যাবে। সেটা সামলাতে পারবেন তো?