আপনি বিনিয়োগ করেন কেন? যে কোনও সাধারণ মানুষকে এ কথা জিগ্যেস করলে দুটো উত্তর পাবেন – ১. টাকা জমানোর জন্য, ২. টাকা বাড়ানোর জন্য। ভারতীয়দের একটা জেনারেশনের কাছেই নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সবার প্রথমে আসে ফিক্সড ডিপোজিট। কেন জানেন?
কারণ ফিক্সড ডিপোজিট এমন একটা স্কিম, যাতে লগ্নি করা খুব সহজ। আপনি যে কোনও ব্যাঙ্কে যান, সামনেই তালিকা ঝোলানো থাকে – কত বছরের জন্য টাকা রাখলে আপনি কত টাকা পাবেন তার পরিষ্কার হিসেব দেখা যায়। যদি সেই ব্যাঙ্কে আপনার অ্যাকাউন্ট থাকে আর সেখানে কিছু টাকা জমা হয়ে থাকে, তা হলে তো সোনায় সোহাগা! ঢুকুন, এফডি সার্টিফিকেট হাতে বেরিয়ে আসুন।
ফিক্সড ডিপোজিটের বিনিময়ে আপনি ট্যাক্স ছাড় পাবেন, লম্বা সময়ে জন্য বিনিয়োগের পাশাপাশি শর্ট টার্ম ফান্ডও আছে। কোনও কোনও এফডির ক্ষেত্রে মাঝপথে কিছু টাকা তুলে নেওয়া, বা লোন নেওয়ার সুবিধে মেলে। সিনিয়ার সিটিজেনরা খানিক বেশি সুদ পান, রিনিউয়াল করানো যায় টার্মের শেষে – এরকম কিছু সুবিধের কথা সবাই জানেন। তা হলে আমরা এফডির বিরোধিতা করছি কেন?
. এফডির সুদের হার যা, মূল্যবৃদ্ধি সব সময়েই তার চাইতে বেশি হয়। ধরুন আপনি ৫.৬% সুদে ১০ বছরের জন্য একটা নির্দিষ্ট রাশি জমা রেখেছেন ব্যাঙ্কে। ১০ বছর পরে দেখবেন ইনফ্লেশনের হার তার চাইতে খানিক হলেও বেশি ছিল। ফলে এই সময়ে আপনার টাকা নিরাপদ থাকলেও বাড়েনি মোটেই।
. এফডিতে প্রাপ্ত সুদ করযোগ্য, ক্ষেত্রবিশেষে টিডিএসও কাটা হয়। ট্যাক্স ফ্রি সেভিংসের জন্য পিপিএফ বা সরকারি বন্ড কেনা অনেক বুদ্ধিমানের কাজ।
. এফডির উপর সুদের হার ক্রমশ কমছে, আগামী দিনে আরও কমবে কিনা জানা নেই। মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মতো বিনিয়োগ করতে চাইলে মিউচুয়াল ফান্ডে টাকা লাগানো উচিত। মার্কেট ভালো থাকলে মিউচুয়াল ফান্ডে আপনি ২০% পর্যন্ত সুদ পেতে পারেন, এফডিতে বর্ত্মানে সুদের হার ৫.৬%।
. হ্যাঁ, একটা সময়ে হয়তো ফিক্সড ডিপোজিট ছাড়া আর কোনও রাস্তা ছিল না বিনিয়োগ করার, কিন্তু এখন আছে। বিশেষ করে ইকুইটি মার্কেটে বুঝে-শুনে টাকা লগ্নি করলে আখেরে লাভবান হবেন। তাই টাকা রোজগার শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই জমানোর কথাও ভাবা উচিত।