আমরা যে রান্নার গ্যাস ব্যবহার করি, নির্মাতারা তার মধ্যে ইচ্ছে করেই এমন গন্ধ দিয়ে দেন যেটা নাকে এসে লাগে। তাই আপনি বাড়িতে একা থাকুন বা আর পাঁচজনের সঙ্গে – গ্যাস লিক করতে আরম্ভ করলে ঠিক বুঝতে পারবেন। বেশিক্ষণ গ্যাসের গন্ধ শরীরে গেলে গা বমিভাব, মাথা যন্ত্রণা, শ্বাস নিতে অসুবিধে ইত্যাদি নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
গ্যাসের গন্ধ পেতে আরম্ভ করলেই বাড়ির যেখানে যত জানলা-দরজা আছে সব খুলে দিতে হবে। শীতের দিনে জানলা বন্ধ করেই থাকে সবাই, তাই ঘরের ভিতর গ্যাস জমে দ্রুত। সেটা হতে দেবেন না, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাইরের হাওয়া চলাচলের ব্যবস্থা করুন। অনেক সময়ে দরজা জানলা বন্ধ রাখার কারণেও কিন্তু দম বন্ধ করা পরিবেশ তৈরি হতে পারে ঘরের ভিতর। যদি দেখেন যে গ্যাসের গন্ধ পাচ্ছেন না, কিন্তু শারীরিক অস্বস্তি হচ্ছে, তা হলেও জানলা-দরজা খুলে দিন। ঘরে কার্বন মনোক্সাইড জমলেও তেমনটা হতে পারে।
গ্যাস লিক হচ্ছে সন্দেহ হলেই মেন সুইচটা বন্ধ করে দিন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। সিলিন্ডারের মুখে চাবির মতো জায়গায় মেন সুইচ থাকে। কোনও আলোর সুইচে হাত না দিয়ে, মোবাইলের আলো না জ্বেলে, কাউকে ফোন না করে আপনাকে সবার প্রথমে এই কাজটি করতে হবে। সম্ভব হলে সিলিন্ডার খুলে ঘরের বাইরে বারান্দা, ছাত বা লবিতে নিয়ে গিয়ে রাখুন।
যতক্ষণ না গ্যাসের গন্ধ কমছে, ততক্ষণ কোনও সুইচে হাত না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। যে কোনও ইলেকট্রিকাল ডিভাইস জ্বাললে ছোটো স্ফুলিঙ্গ তৈরি হয়। তা থেকে ঘরের মধ্যে জমে থাকা গ্যাসে আগুন লেগে যেতে পারে। গ্যাসের আশেপাশে কোথাও কোনও সুইচ না রাখলে সচেয়ে ভালো হয়।
এবার ফোন করুন এমার্জেন্সি নাম্বারে। সাধারণত আপনার ডিস্ট্রিবিউটরের দেওয়া কাগজপত্রেই গ্যাস লিকের মতো সমস্যায় কার সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত তার হদিশ দেওয়া থাকে। ইন্টারনেটেও নানা নম্বরের হদিশ মিলবে। তবে এমার্জেন্সি পরিষেবা যাঁরা দেন, তাঁরা না আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধরে ঘরের বাইরে অপেক্ষা করুন।
রাতে সকলকেই গ্যাসের মেন সুইচ অফ করে তবেই শুতে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এটি খুব ভালো অভ্যেস, কারণ বিপদ তো আর আগে থেকে বলে আসে না — তাই সময় থাকতে সাবধান হওয়া খুব জরুরি।
রান্নাঘরের খুব কাছে ফ্রিজ বা গিজারের সুইচ না রাখলেই ভালো করবেন। কোনও কারণে যদি গ্যাস লিক করে এবং সেই সময়ে আপনি গিজার, ফ্রিজ, আভেনের মতো কোনও গ্যাজেটের সুইচ অন করে দেন, তা হলে কিন্তু বড়ো বিপদ হতে পারে।