আপনার বাজেট এবং প্রয়োজনের উপর নির্ভর করে বাড়ি কেনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিন। যদি মনে হয় এমন কোনও আস্তানা পছন্দ হচ্ছে যেখান থেকে যাতায়াত করা খুব সুবিধের, আশপাশে স্কুল, কলেজ, বাজার সব আছে, যোগাযোগের ব্যবস্থা ভালো, ফ্ল্যাটটিতেও আলো-বাতাস খেলে — তা হলে সেকেন্ড হ্যান্ড কিনলে বরং দামের দিক থেকে খানিক সস্তাই পড়বে। তবে আগে কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে একটু খোঁজখবর নেওয়া দরকার।
. প্রথমেই জানতে চান, যাঁর বাড়ি তিনি বিক্রি করতে চাইছেন কেন? অনেকেই ছোটো ফ্ল্যাট বেচে বড়ো প্রপার্টি কিনতে চান। বা হয়তো বাড়িতে গ্যারাজ নেই, বাচ্চার পড়ার ঘর নেই, যাতায়াত করতে অসুবিধে হচ্ছে বা ট্রান্সফার হয়ে গিয়েছে পাকাপাকি – তেমন কারণ হলে সন্দেহের অবকাশ নেই। কিন্তু ভালো পাড়ায় সুন্দর ফ্ল্যাট কেউ কম দামে ছেড়ে দিচ্ছেন দেখলে একটু খোঁজখবর নিন। হয়তো প্রতিবেশী দুর্মুখ, বা বাড়িতে জল, বাথরুম, ছাদ, ড্যাম্প সংক্রান্ত কোনও সমস্যা আছে। স্রেফ ব্রোকারের কথায় না ভুলে নিজেও একটু খোঁজ নিন।
. যিনি ফ্ল্যাট বিক্রি করছেন, তিনিই আসল মালিক তো? নাকি কোনও ডিসপিউটেড প্রপার্টি আপনার ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা চলছে? ভালো করে জেনে-শুনে তবেই এগোন।
. আগের মালিক ফ্ল্যাটটি ব্যাঙ্ক বা কোনও আর্থিক সংস্থার কাছে মর্টগেজ দিয়ে রাখেননি তো? কাগজপত্র কিন্তু আপনাকে খুব মন দিয়ে দেখতে হবে। মর্টগেজ দেওয়া ফ্ল্যাটের আসল কাগজপত্র ব্যাঙ্কের কাছেই জমা থাকার কথা – টাকা মিটলে তবেই ব্যাঙ্ক তা রিলিজ করবে। অরিজিনাল কাগজ হাতে না পেলে কথা এগোবেন না।
. অনেক সময়েই আগের মালিক কয়েক বছর থাকার পরেও ফ্ল্যাটের মিউটেশন না করিয়ে বেচে দেন – পরের ক্রেতাকে ফ্ল্যাট হওয়ার দিন থেকে আরম্ভ করে টাকা শুধতে হয়। কেউ কেউ মেনটেনেন্সের টাকা বকেয়া ফেলে রাখেন – তেমন কিছু থাকলে কিন্তু আপনাকে বাড়তি টাকা গুনাগারি দিতে হবে। দরকারে বিল্ডিং কমিটির সঙ্গে কথা বলে নেবেন।
. ছাদের নিচে ফ্ল্যাট কিনছেন? ভালো কোনও মিস্ত্রি বা কনট্র্যাকটরকে দিয়ে ছাদের অবস্থা যাচাই করে নিন। তা না হলে ফ্ল্যাট কেনার পর থেকেই সমস্যায় পড়বেন।
. পাঁচ থেকে দশ বছরের পুরোনো ফ্ল্যাটের স্বাস্থ্য ভালো থাকে, জল-কল নিয়েও কোনও সমস্যা সাধারণত হয় না। তাই এর চেয়ে বেশি পুরোনো প্রপার্টি কেনার আগে বিস্তারিত খোঁজখবর নেওয়া বাধ্যতামূলক।
. ধারে-কাছে ভ্যাট, কারখানা ইত্যাদি আছে কিনা দেখে নিন। এগুলি কিন্তু জীবন অতিষ্ঠ করে তুলতে পারে। বেকারির সুগন্ধও একটা সময়ের পর মাথা ধরার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। অনেক সময়ে ফ্ল্যাটের সামনে রাস্তা সম্প্রসারণ বা মেট্রো প্রজেক্টের কাজ চলে বছরের পর বছর ধরে – বাসিন্দার ক্ষেত্রে কিন্তু সেটাও বড়ো সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে।