আমাদের সমাজে ডিভোর্স শব্দটা হচ্ছে খানিকটা কালো দাগের মতো। যার গায়ে একবার সে দাগ লেগেছে, তার দিকে একটু বাঁকা চোখে তাকানোটাই দস্তুর। মহিলা হলে তো কথাই নেই – ভাবখানা এমন, যেন তিনি মানিয়ে-গুছিয়ে চলেননি বলেই বিয়ের মতো পবিত্র সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা সম্ভব হল না।
সমাজের এই রক্তচক্ষুকে অবশ্য আজকালকার শিক্ষিত মেয়েরা বিশেষ পাত্তা দেন না। বিশেষ করে যাঁদের পায়ের নিচের মাটি শক্ত, রোজগার আছে, তাঁরা মানিয়ে নিয়ে আর চলতে চাইছেন না — বরং নিজের মতো করে ভালো থাকতে চেয়ে আলাদা হয়ে যাচ্ছেন। মনের মানুষ খুঁজে পেলে পরে আবার সংসারও পাতছেন – একটা ভুল জীবনভর টেনে নিয়ে যাওয়াটাই অর্থহীন মনে হচ্ছে।
সম্প্রতি বিচ্ছেদ হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট তারকা শিখর ধাওয়ান ও তাঁর অস্ট্রেলিয়ার প্রবাসী বাঙালি স্ত্রী আয়েশা মুখার্জির। শিখর আয়েশার দ্বিতীয় স্বামী, দুই কিশোরী কন্যাসহ তাঁকে বিয়ে করেছিলেন আট বছর আগে। তাঁদের একটি পুত্রসন্তান আছে। তিন সন্তানসহ একা হওয়ার পর নিজের অভিজ্ঞতা আয়েশা জানিয়েছেন একটি ইনস্টা পোস্টে – সেখানেই ধরা পড়েছে আজকের মেয়েদের চিন্তাভাবনার টুকরো ছবি।
আয়েশা লিখেছেন, ‘একটা সময় আমার নিজের কাছেই ‘ডিভোর্স’ ছিল একটা নোংরা শব্দ – যদ্দিন না নিজে দু’-দুবার বিচ্ছেদের মধ্যে দিয়ে গেলাম, বুঝতেই পারিনি এক-একটা শব্দের মধ্যে কতটা শক্তি লুকিয়ে থাকে! প্রথমবার ডিভোর্সের সময় আমার খুব ভয় হয়েছিল – মনে হয়েছিল আমি ফেল করলাম, ভুল করলাম। বাচ্চাদের কষ্ট দিলাম, বাবা-মা হয়তো ছোটো হয়ে গেলেন আমার জন্য।’
‘দ্বিতীয় বিয়েতে আমার ভয়টা আরও বেশি ছিল – ভাবতে পারিনি আবার একটা সম্পর্ক ভেঙে যাবে। তারপর গোড়ার আবেগ, আতঙ্কের রেশটা কাটলে যখন নিজের মুখোমুখি বসলাম, তখন দেখলাম আমি তো বেশ আছি, ভয়টাও কেটে গিয়েছে!’
আপনিও কি একটা ভেঙে যাওয়া সম্পর্কের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছেন? অপরাধবোধে ভুগছেন? আয়েশার টিপসগুলি আপনার কাজে লাগতে পারে দারুণভাবে!
১. বিয়ে টিকিয়ে রাখার জন্য আপনি নিজের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যকে বিসর্জন দিতে রাজি হননি, আর সেটা দোষ নয়।
২. ডিভোর্স হয় কারণ কখনও কখনও নিজের সেরাটা দেওয়ার পরেও প্রার্থিত ফল পাওয়া যায় না। জীবন অনেক বড়ো, তাতে এরকম ঘটনা ঘটতেই পারে – তার পরেও এগিয়ে যেতে হবে।
৩. সম্পর্ক ভেঙে গেলেও ভুলবেন না যে আপনি তা থেকে অনেক কিছু শিখেছেন, মানুষটার সঙ্গে অনেক ভালো মুহূর্ত কাটিয়েছেন। সেটাকে পাথেয় করে এগিয়ে চলুন। আগামী সম্পর্কে পুরোনো ভুলগুলো রিপিট করবেন না।
৪. একটা ডিভোর্স আপনার সহ্যক্ষমতা বাড়ায়, মানুষ হিসেবে আপনি অনেক পরিণত হয়ে ওঠেন।
৫. সোজা কথায়, ডিভোর্সের অর্থ কী, সেটা আপনি ঠিক করবেন। অন্য কারও কথায় প্রভাবিত হবেন না।
https://www.instagram.com/p/CTeBuiopxES/?utm_medium=copy_link