পরিসংখ্যান বলছে, এ দেশের বহু মানুষ এখনও কর্মহীন। বা আগে যা রোজগার করতেন, তার একটা ভগ্নাংশ মাত্র এখন হাতে পান। এই অবস্থায় রোজের খরচ কমানোর আপ্রাণ চেষ্টা করা ছাড়া আর কোনও রাস্তাই নেই। খারাপ সময় আসে, কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী হয় না, একদিন এই পরিস্থিতি কেটে যাবেই ঠিক।
একটা কথা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন যে যাঁরা কিছু টাকা সঞ্চয় করে রাখতে পেরেছিলেন, তাঁরা অনেকটাই ভালো আছেন এই পরিস্থিতিতে? তাই খুব কম টাকায় সংসার চালিয়ে কিছুটা সরিয়ে রাখার চেষ্টা করতেই হবে। সব সময়ে যে আপনি সফল হবেন তা নয়, তবে মাথায় গেঁথে নিতে হবে যে যা রোজগার, তার সবটা খরচ করা যায় না।
বাচ্চাদের লেখাপড়ার খরচ সামলাতে নাজেহাল অবস্থা?
অনলাইন ক্লাস শুরু হওয়ার পর থেকে বাচ্চাদের লেখাপড়ার খরচ বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। ক্লাস করার জন্য আলাদা ডিভাইস দরকার, সঙ্গে আছে ইন্টারনেটের মূল্য। তার পর স্কুলের মাইনে, প্রাইভেট টিউটর। যাঁরা সাধ করে ছেলে-মেয়েকে বড়ো স্কুলে ভর্তি করিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেরই এখন হাত কামড়ানোর দশা। বহু বাবা-মা বাধ্য হয়ে সন্তানকে সরকারি স্কুলে ভর্তি করছেন।
এমন অবস্থায় যাঁরা পড়েছেন, তাঁদের প্রতি আমাদের পূর্ণ সহানুভূতি আছে। কিন্তু আপাতত মাথা ঠান্ডা রাখুন, ভেঙে পড়লে চলবে না একেবারেই। সঞ্চয় ভেঙে হলেও পড়াশোনাটা চালিয়ে যেতেই হবে। বাচ্চাদের পুরো পরিস্থিতিটা খুলে বলুন। তারা যথেষ্ট পরিণতবুদ্ধির অধিকারী। প্রাইভেট টিউশনের জায়গায় ইউটিউব ভিডিওর সাহায্য নিন – বহু সংস্থা আছে যারা বিনামূল্যে এই ধরনের সহায়তা দেয়।
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাবাবদ খরচ চালাবেন কীভাবে?
আপাতত আপনার হাতে সরকারি চিকিৎসাব্যবস্থার দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই। এ রাজ্যে বিনামূল্যে ভালোই চিকিৎসা মেলে, যাঁরা স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করিয়েছেন, তাঁদের নিঃসন্দেহে সুবিধে হবে।
কোনওভাবেই পারসোনাল লোনের চক্করে পড়বেন না
এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য অনেকেই হয়তো চড়া সুদে হলেও ঋণ করার কথা ভাবছেন। কিন্তু তার চেয়ে বড়ো বিপদ আর কিছুতে হবে না। ধারের টাকা শুধতে গিয়ে জিভ বেরিয়ে যাবে। তার চাইতে সোনাদানা, জমি বা প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে কিছু তোলার কথা ভেবে দেখতে পারেন। স্কুলের সঙ্গে কথা বলে দেখুন কিছু ক্ষেত্রে ছাড় পান কিনা
ইনশিওরেন্সের প্রিমিয়াম দেওয়া সম্ভব হলে অবশ্যই দেবেন
বিমা, বিশেষ করে জীবনবিমার প্রিমিয়াম দেওয়া বন্ধ করবেন না। দরকারে কিছু জমানো টাকা তুলে নিয়েও বিমার টাকাটা দেওয়া দরকার।
খাওয়াদাওয়া, পোশাক, সামাজিক ঠাটবাট, বেড়ানো ইত্যাদি থেকে খরচ কমানো সবচেয়ে সোজা। আপাতত শিকেয় তুলে রাখুন সব শখ-আহ্লাদও।