একে তো কাজের চাপ, তার উপর সংসারের হাজারটা ঝামেলা। দিনের শেষে ক্লান্ত শরীর নিয়ে বিছানায় গেলে কয়েক বছর আগেও ঘুমে চোখ জড়িয়ে আসত। এখন সোশাল মিডিয়ার দৌলতে সেটাও হওয়ার উপায় নেই!
সিনেমা বা ওয়েব সিরিজ় দেখতে বসেও হিসেব থাকে না সময়ের। আর সেটাও কিন্তু আপনার ঘুম চলে যাওয়ার অন্যতম কারণ। অতক্ষণ চড়া আলো ঘুম কেড়ে নেয়। এর সুদূরপ্রসারী ফল কিন্তু মারাত্মক হতে পারে। শরীর ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়বে, বাড়বে প্রদাহ, নানা ক্রনিক সমস্যা দেখা দেবে।
মনে রাখবেন, সূর্যাস্তের পর যত বেশিক্ষণ আপনি উজ্জ্বল আলোর সংস্পর্শে থাকবেন, তত দেরি হবে ঘুম আসতে। বই পড়া তাও চলতে পারে, কিন্তু উজ্জ্বল স্ক্রিনের সামনে না থাকতে পারলেই ভালো। তাড়াতাড়ি রাতের খাওয়া সেরে নিন। নিভিয়ে দিন উজ্জ্বল আলো। বাড়ির ছাতে তারার আলোর নিচে খানিকক্ষণ হাঁটতে পারেন রাতে – শীতল বাতাস আর মৃদু আলোর প্রভাবে চোখে ঘুম নামবেই!
সাধারণত আমাদের শরীরের ঘুমনো এবং জেগে ওঠার নির্দিষ্ট রিদম থাকে, তাকে বলে সারকাডিয়ান রিদম। প্রতি 24 ঘণ্টায় একবার অন্তত আপনাকে ঘুমোতে হবেই। যদি রোজ রাতে যথেষ্ট ঘুম না হয় বা দিনের পর দিন আপনি ভুল সময়ে ঘুমোতে যান তা হলে সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর তার প্রভাব পড়তে বাধ্য। দিনের বেলা ঘুম পাবে, ক্লান্তিবোধ গ্রাস করবে, কাজে উৎসাহ থাকবে না। সমস্যা হবে গাড়ি চালানো বা মনঃসংযোগ করে কোনও কাজ করার ক্ষেত্রে।
আমাদের ঘুমের দুটো ভাগ থাকে – র্যাপিড আই মুভমেন্ট (REM) ও নন র্যাপিড আই মুভমেন্ট (Non REM)। প্রথমটি হালকা ঘুম, এই স্তরেই আমরা স্বপ্ন দেখি। পরেরটি গাঢ় ঘুম। প্রতি রাতে আপনি যতক্ষণ ঘুমোচ্ছেন, তার মধ্যে চক্রাকারে আবর্তিত হতে থাকে এই দুই প্রকার। দুই ধরনের ঘুমই সু-স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় এবং কোনও একটির ক্ষেত্রে ঘাটতি থাকলেও সমস্যা শুরু হবে।
মস্তিষ্ককে সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখার জন্য প্রতিদিন শরীরকে প্রয়োজনীয় ঘুম একান্ত দরকারি। যদি সকালে ওঠার পর ঝরঝরে লাগে, তা হলে বুঝবেন যে আপনার ঘুমের কোটা পূরণ হচ্ছে। যাঁরা প্রায়শই রোগে ভোগেন বা খিটখিট করেন, প্রেশার-সুগারের মতো সমস্যায় ভুগছেন – তাঁরা শরীরকে পূর্ণ বিশ্রাম দেওয়ার ব্যবস্থা করুন।