আজকাল ঘরে ঘরে বাড়তি ওজনের সমস্যা — মেটাবলিক রেট সবারই খুব কম, কারণ হাঁটাচলার পাট প্রায় উঠেই গিয়েছে! মোটামুটি সবাই কাজকর্ম বাদ দিয়ে দিনের বাকি সময়টা অনলাইন থাকেন। সকাল-সন্ধে বাড়ির ছাতে হাঁটার সময় না থাকতে পারে, মাঝরাত পর্যন্ত জেগে ওয়েব সিরিজ দেখার বিরাম নেই।
সেই সঙ্গে হাতের কাছে আছে নানা লোভনীয় খাবার। বাইরের খানা যাঁরা একেবারেই খান না, তাঁদের ঘরে নির্ঘাত মাস্টারশেফ লেভেলের রাঁধুনি আছেন। ফলে বাচ্চা-বুড়ো সবাই হয় ফ্যাটি লিভার, না হলে ডায়াবেটিস, হরমোন, বাড়তি কোলেস্টেরলের সমস্যায় ভুগছেন।
এ সব কিছুর থেকে মুক্তি পাওয়ার একটা খুব সহজ রাস্তা আছে। আর সেটা ট্রাই করে দেখতে পারেন একেবারে বিনামূল্যে! ফল যে মিলবেই, সে ব্যাপারে গ্যারান্টি দেওয়া যায়, তার কারণ সারা দুনিয়ার নানা প্রান্তে হওয়া একাধিক গবেষণায় তা প্রমাণিত হয়েছে।
আপনাকে ফিরতে হবে মানুষের পক্ষে যে জীবনযাত্রা সব চাইতে স্বাভাবিক, সেই চক্রে। অর্থাৎ, মেনে চলতে হবে সারকাডিয়ান রিদম। সূর্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আবর্তিত হবে আপনার বডি ক্লক। ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে পড়ুন। একেবারে কাক ডাকা ভোরে উঠতে বলছি না, মোটামুটি ছ’টা-সাড়ে ছ’টায় ঘুম ভাঙলেই চলবে। তার পর একটু ব্যায়াম করুন, দিনের কাজ শুরু করুন সকাল থেকে।
ব্রেকফাস্ট মাঝারি হালকা হতে হবে, দুপুরের দিকে যেন খিদে পায়। বেলা তিনটেয় এক থাল ভাত নিয়ে বসবেন না, মোটামুটি ১২.৩০-১টার মধ্যে দুপুরের ভোজন সারুন। এটাই হবে আপনার দিনের সবচাইতে বড়ো মিল। যাঁরা দুপুরে বসে খাওয়ার সময় পান না, একমাত্র তাঁরাই সকালে ভারী জলখাবার খেতে পারেন।
বিকেলের পর থেকে একেবারেই হালকা কিছু খান – ফল হলে সবচেয়ে ভালো হয়। সন্ধের মধ্যে রাতের খাওয়া সেরে ফেলতে হবে। বিকেলে চপ-মুড়ি বা রোল খাওয়ার অভ্যেস থাকলে ছাড়ুন আজই। রাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমনোর ব্যবস্থা করুন। মাঝরাত পর্যন্ত জেগে থাকা, বেশি রাতে খিদে পেলে কেক বা মিষ্টি খাওয়ার অভ্যেস থাকলে ছাড়তে হবে এখনই।
সূর্য ডোবার পর কমে যায় আমাদের বিপাক ক্রিয়ার হার। তাই অনেক রাতে খুব স্বাস্থ্যকর খাবার খেলেও কিন্তু তার বিপাক হবে না এবং আপনার ফ্যাটের পরিমাণ বাড়বে।
কাজ শেষ করে ফেলুন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। তার পর বিশ্রাম নিন, পরিবারের সঙ্গে খানিক সময় কাটান, বই পড়ুন, সিনেমা দেখুন।
অনেকে বলেন যে তাঁরা রাতে ঘুমোতে পারেন না, সকাল হলে তবেই ঘুম নেমে আসে চোখে। তাঁদের একটাই কথা বলার আছে – এই অভ্যেসটা নিয়ে আপনি জন্মাননি, তা তৈরি হয়েছে অনেক পরে। স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করুন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। তা হলে আর অ্যান্টি এজিং ক্রিম বা ডার্ক সার্কেলের নিরাময় খুঁজতে হবে না। বাড়তি ওজনের বোঝা থেকেও মুক্তি মিলবে।