কিছু গবেষক দাবি করেন, স্রেফ ডায়েটের সাহায্যে অধিকাংশ মানুষের টাইপ টু ডায়াবেটিস (অর্থাৎ যা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের কারণে বেশি বয়সে হয়) রিভার্স করানো সম্ভব – সোজা কথায়, খাওয়াদাওয়া সংক্রান্ত কিছু বিধিনিষেধ মেনে চললে আপনি এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
এইটুকু পড়েই অনেকে মাত্রাতিরিক্ত আশাবাদী হয়ে উঠবেন – কিন্তু গোড়াতেই অত কিছু না ভেবে যুক্তি-বুদ্ধি দিয়ে চিন্তাভাবনা করা জরুরি। যাঁরা দীর্ঘদিন ডায়াবেটিসের ওষুধ খাচ্ছেন বা ইনসুলিন নিচ্ছেন, তাঁরা রাতারাতি নতুন কোনও ডায়েটের খপ্পরে পড়ে খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দেবেন না – প্রতি পদক্ষেপে ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং মনিটরিংয়ের মধ্যে থাকুন, রক্তে চিনির মাত্রা আচমকাই অনেকটা কমে গেলে আরও বেশি বিপদ হতে পারে।
. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে ওজন কমানো – বিশেষ করে যাঁরা ওবিস, তাঁরা ওজন কমালেই রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন সহজে। আপনার প্যানক্রিয়াস ও লিভারে যদি ফ্যাট জমে থাকে, তা হলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হবে। তাই ভাজাভুজি, বেশি মিষ্টি, ময়দা, কর্নফ্লাওয়ার ইত্যাদি খাওয়া কমান, আস্থা রাখুন ফল-তাজা শাকসবজির উপর। মোদ্দা কথা, খাবারে ফাইবারের পরিমাণ বাড়াতে হবে – কিন্তু কতটা বাড়াবেন তা ঠিক করার জন্য প্রশিক্ষিত পেশাদারের সাহায্য নেওয়া জরুরি।
. সুষম, পুষ্টিকর খাবার খাওয়া খুব জরুরি। তার মধ্যে যেন কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট সব থাকে। রাতারাতি ভাত খাওয়া ছেড়ে দিলে বা প্রোটিনের পরিমাণ বাড়িয়ে দিলেই কিন্তু আপনার সমস্যার সমাধান হবে না। উলটে ডায়েটের ব্যালেন্স নষ্ট হয়ে সমস্যা বাড়বে।
. রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকলেও কিন্তু হুট করে ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেবেন না – নিয়মের সামান্য ত্রুটি হলেই হরমোনের ভারসাম্যহীনতা ফের বিব্রত করতে পারে। তাই সাবধান থাকা জরুরি।
. ডায়াবেটিস থাকলেই মিষ্টি, আলু, ভাতের মতো খাবারকেই সব সময় ভিলেন ঠাউরে নেওয়া হয় – স্রেফ এইটুকুতেই থামলে কিন্তু না ওজন কমবে, না সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। প্যাকেটবন্দি খাবার, বোতলবন্দি পানীয়, অতিরিক্ত ড্রাই ফ্রুট (বিশেষ করে কিশমিশ, খেজুর) সব কিছু থেকেই দূরে থাকতে হবে।
. সেই সঙ্গে এক জায়গায় বসে থাকার অভ্যেস ছাড়তে হবে। শারীরিকভাবে নড়াচড়া করা জরুরি। খেয়েই শুয়ে পড়বেন না, খানিক হাঁটাচলা, পায়চারি করুন। সেই সঙ্গে সকাল-বিকেল খানিকটা দ্রুত গতিতে হাঁটতে হবে।