মাঝরাত পেরিয়ে যখন ভোরের দিকে যায়, তখন আপনার ঘুম আসে? নাকি ভোরের আলো না ফুটলে ঘুমোতেই পারেন না? এটা দিনের পর দিন হতে থাকলে কিন্তু বিপদ – আপনার সারকাডিয়ান সিস্টেম বিগড়ে গিয়েছে সম্ভবত। এভাবে বেশিদিন চালাতে পারবেন না। ধীরে ধীরে নানা মেটাবলিক সমস্যা দেখা দেবে। তাই টানা কয়েক সপ্তাহ এরকম চলতে থাকলে একবার আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
রাতের পর রাত ঘুম না হওয়াটাকে প্রশ্রয় দিলে কিন্তু ভুল করবেন। নানা শারীরবৃত্তীয় কারণে তা হতে পারে – যাঁরা মেনোপজের দোরগোড়ায় এসে দাঁড়িয়েছেন বা প্রক্রিয়াটি শুরু হয়ে গিয়েছে, তাঁদের রাতের ঘুমের সাইকেলটা নষ্ট হয়ে যায়। হরমোনাল ডিসঅর্ডার দেখা দিলে এমনটা হতে পারে। দেখতে হবে আপনার নিউরোলজিকাল কোনও সমস্যা হচ্ছে কিনা।
তবে তার আগে কয়েকটি প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করান নিজেকে। সত্যিই ইনসমনিয়াই হয়েছে, নাকি ঘুমের সাইকেলটা ঘেঁটে ফেলেছেন আপনি নিজেই?
১. অফিসের কাজ শেষ করতে বেশি রাত হয়?
২. অনেক রাত পর্যন্ত অনলাইন থাকেন বা সিনেমা দেখেন?
৩. রাত ১১টা না বাজলে আপনি ডিনার খেতে পারেন না?
৪. রাতের বেলা ওয়ার্কআউট করা আপনার স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে?
৫. খুব স্ট্রেস যাচ্ছে কিছুদিন?
৬. সারাক্ষণ মন খারাপ থাকে?
উপরের প্রত্যেটি কারণই কিন্তু ঘুমের বারোটা বাজিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট! শুতে যাওয়ার ঘণ্টা দু’ইয়েক আগে রাতের খাওয়া সেরে ফেলুন – রাতে খুব হালকা কিছু খেতে পারলেই ভালো হয়। ব্যায়ামের ক্ষেত্রেও আপনাকে ঘণ্টা তিনেকের অন্তত একটা গ্যাপ রাখতে হবে।
কোন কোন প্র্যাকটিস ঘুমের পক্ষে সহায়ক?
১. ঘরের আলো কমিয়ে রাখুন। কম আলো হচ্ছে শরীরে ঘুম নেমে আসার প্রাকৃতিক সিগনাল।
২. রাতে বেশিক্ষণ টিভি/ কম্পিউটার/ মোবাইলে ব্যস্ত থাকবেন না। চড়া আলোয় ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে।
৩. মেডিটেশন করুন। যোগব্যায়ামও মনকে শান্ত করে, তাতে ঘুম আসে তাড়াতাড়ি। প্রাণায়াম করতে পারেন। শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি স্বাভাবিক হলে তাড়াতাড়ি ঘুম আসবে।
৪. শোওয়ার খানিক আগে একটা ছোটো কলা খেতে পারেন, ম্যাগনেশিয়াম ঘুমের পক্ষে সহায়ক। কারও কারও হালকা গরম দুধ খেলেও কাজ হয়। তবে যাঁরা দুধ বা কলা হজম করতে পারেন না, তাঁরা এসব ট্রাই করতে যাবেন না।
৫. রোজের রুটিনে খানিকটা এক্সারসাইজ রাখার চেষ্টা করুন। এতে যে কতটা উপকার হতে পারে, তা না করা পর্যন্ত বুঝবেন না।
৬. রাতে বেশি জল খাবেন না, বার বার বাথরুমের জন্য উঠলে ঘুম ভালো হবে না – সেটাই স্বাভাবিক।
৭. বেশি সিগারেট বা মদ দুটোই সমান ক্ষতিকারক হতে পারে শরীরের পক্ষে।