আপনি একা নন, সারা দুনিয়ায় এমন মানুষের সংখ্যা অজস্র। কেউ একবার কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন, কেউ একাধিকবার, কারও বা রিপোর্ট পজিটিভ এলেও শরীরে কোনও রোগ লক্ষণ ফুটে ওঠেনি – কিন্তু কার্যত দেখা যাচ্ছে মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও শরীরে আগের জোর ফিরছে না। ওঠা-বসা বা কোনও ছোটোখাটো কাজ করতে গেলেও হাঁফ ধরে যাচ্ছে, মনে থাকছে না কোনও জরুরি কথা। কিছু ডাক্তার বলছেন এ রোগের নাম ক্রনিক ফ্যাটিগ সিনড্রোম। কারও মতে এটি লং কোভিডের রেশ।
. কারা আক্রান্ত হচ্ছেন? তার কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। তবে যাঁরা এই সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের ইমিউনিটি খুব লো হয়ে যাচ্ছে, শরীরে লুকিয়ে থাকা অন্য নানা ভাইরাস সক্রিয় হয়ে উঠছে। কারও কারও কোভিড থেকে সেরে ওঠার কয়েক মাস পরেও এই সমস্যাগুলি প্রকট হয়ে উঠছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পর্যন্ত এ বিষয়ে আলোচনা করেছে সাম্প্রতিক এক বুলেটিনে।
. আমেরিকার জনস হপকিনস স্কুল অফ মেডিসিন, স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও নানা কেন্দ্রে এ নিয়ে বিস্তর গবেষণা হচ্ছে, পাশাপাশি যত দিন যাচ্ছে, তত বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। যাঁদের এই সমস্যা আছে, তাঁদের সকালবেলা বিছানা ছেড়ে ওঠা বা ছোটোখাটো সাধারণ কাজ সেরেই দম ফুরিয়ে যাচ্ছে – অফিসের কাজ সারার পরে তো মাথা তোলার শক্তি থাকছে না।
. সমস্যা হচ্ছে, এখনও তেমন কোনও ওষুধ বেরোয়নি যা দিয়ে এ রোগের চিকিৎসা করানো সম্ভব। তার চেয়েও বড়ো কথা হচ্ছে, আক্রান্তরা কিছুদিন ভালো থাকেন, তার পর ফের ভোগেন। অনেক সময়ে দিনের খানিকটা সময় শরীর সুস্থ থাকে, তারপর আবার ক্লান্তি গ্রাস করে নেয়। যখন ভালো থাকবেন, সেই সময়ের মধ্যেই কাজকর্ম সেরে ফেলার চেষ্টা করুন।
. কেউ কেউ বলছেন এ সমস্যা থেকে বাঁচতে গেলে কাজের বহর কমাতেই হবে। দরকারে পার্ট টাইম কাজ করুন, কিন্তু শরীরের দিকে নজর দিন। ভালোভাবে ঘুমোনোর, যথেষ্ট বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করুন। সুষম খাবার খাওয়াও খুব জরুরি।
. তবে আশার কথা হচ্ছে, বিশেষজ্ঞরা সম্ভবত এই বছরের মধ্যেই এ সমস্যার সমাধানে পৌঁছতে পারবেন।
. জোর করে কোনও কিছুই করবেন না। ব্যায়াম করতে না পারলে অল্প হাঁটুন, যোগাভ্যাস করুন – তাতেই হবে। ধীরে ধীরে আবার শক্তি ফিরে আসবে, তার আগে শরীরের উপর জোর খাটানোর দরকার নেই।