কোন বয়স থেকে গর্ভনিরোধক সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা তৈরি হওয়া উচিত?
এ কথা অস্বীকার করে কোনও লাভ নেই যে যুগ বদলাচ্ছে এবং তারই হাওয়া এসে লাগছে পুরো সমাজব্যবস্থার গায়ে। অধিকাংশ স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞই মেনে নেন যে আজও বেশিরভাগ মা-বাবাই মানতে পারেন না যে কিশোর বয়স থেকেই তাঁদের সন্তানের যৌন চেতনা পূর্ণ মাত্রায় জেগে ওঠে। তাই স্কুল স্তরেই কাউন্সেলিং শুরু হওয়া উচিত। এছাড়া টিনএজ প্রেগন্যান্সি ঠেকানোর কোনও রাস্তা নেই।
অবিবাহিতদের ক্ষেত্রে কোন কনট্রাসেপটিভ আদর্শ?
কোনও ছুঁৎমার্গ না রেখে এ কথা মেনে নেওয়া ভালো যে আমাদের সমাজে এখন প্রচুর সিঙ্গল মহিলা ও পুরুষ আছেন এবং তাঁদের অনেকেই কোনও সম্পর্কে না থেকেও নিয়মিত যৌন জীবন বজায় রাখতে আগ্রহী। এঁদের ক্ষেত্রে ব্যারিয়ার মেথড আর ওরাল পিল দু’টি একসঙ্গে ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয় সাধারণত। নিরাপদ যৌনতার কোনও বিকল্প নেই। গর্ভাধান আটকানোর পাশাপাশি এসটিআই বা সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ইনফেকশন থেকেও নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে পুরুষসঙ্গীর কন্ডোম ব্যবহার আবশ্যক।
বিয়ের আগে গাইনিকোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়ার দরকার আছে?
ওরাল কনট্রাসেপটিভ পিল জাস্ট দোকানে গিয়ে কিনে খেতে শুরু না করারই পরামর্শ দেন অধিকাংশ ডাক্তার। যাঁরা বিয়ের প্ল্যানিং করছেন, তাঁরা একবার বিয়ের আগেই গাইনিকোলজিস্টের কাছে কাউন্সেলিংয়ে যান। বিয়ের ঠিক আগেই যে ঋতুস্রাব হবে, সেই সময় থেকেই পিল চালু করুন। রাতারাতি ওষুধ খেলেই প্রার্থিত ফল পাওয়ার আশা করবেন না।
প্রথমবার কনট্রাসেপটিভ খেলে কিছু কিছু সমস্যা হতে পারে। যেমন গা বমিভাব, অল্প স্পটিং ইত্যাদি। তার পর ব্যবহার করতে করতে বিষয়টা সহজ হয়ে আসে ক্রমশ। তাছাড়া আমরা এমন একটি জনজাতি যাদের মধ্যে অজস্র থ্যালাসেমিয়া ক্যারিয়ার লুকিয়ে আছে, তাই অতি অবশ্যই বিয়ের আগে কিছু নির্ণায়ক রক্তপরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে। সে সবের জন্যও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলা দরকার।
গর্ভনিরোধক নিয়ে আমাদের সমাজ কতটা মুক্তমনা?
আমাদের সমাজ যতই আধুনিক হোক না কেন, এখনও পর্যন্ত গর্ভনিরোধক নিয়ে পরিষ্কার করে কোনও আলোচনা চালানো নিয়ে নানা দ্বিধাদ্বন্দ্ব আছে। এখনও পর্যন্ত অধিকাংশ মা-বাবাই এটা মেনে নিতে পারেন না যে তাঁদের সন্তানদের, বিশেষ করে অবিবাহিত সন্তানদের গর্ভনিরোধকের প্রয়োজন থাকতে পারে। আর সেই কারণেই মুড়ি-মুড়কির মতো এমার্জেন্সি কনট্রাসেপটিভ পিলের ব্যবহার হয়। তার ফলে অজস্র সমস্যা বাড়ছে।
এমার্জেন্সি কনট্রাসেপটিভ পিল থেকে কী কী সমস্যা হতে পারে?
এমার্জেন্সি কনট্রাসেপশনের মূল উপাদান হচ্ছে প্রজেস্টেরনের হাই ডোজ়। ওষুধ খাওয়ার পর শরীরে হরমোনের ব্যালান্সে অসাম্য আসে। ফলে তিন-চারদিন পর একটা ব্লিডিং হয়। তার পর অনেকের ক্ষেত্রেই স্বাভাবিক চক্রটা শুরু হতে সময় লাগে।
অনেকে আবার একটি ঋতুচক্রের মধ্যে একাধিক এমার্জেন্সি পিল খেয়ে নেন। তাতে আরও সমস্যা বাড়ে। ইন ফ্যাক্ট, বেড়াতে যাওয়া, বিয়েবাড়ি, পুজো ইত্যাদি কারণে পিরিয়ড পিছিয়ে দেওয়ার জন্যও অনেকে ওষুধপত্র খান, সেটাও হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণ হতে পারে।