ঠিক সময়ে হোমওয়ার্ক সেরে ফেলা। আপনার কাজের সময়ে একটুও বিরক্ত না করা। পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া। বায়না না করে ঘুমোতে যাওয়া – এইসব কারণে কি আপনি বাচ্চাকে কেক, কুকি, ফ্রায়েড চিকেন, পিজা, চিপস কিনে দেন? তার ফলে যে বাচ্চাটার কতটা ক্ষতি হচ্ছে, আন্দাজ করতেও পারবেন না!
ভালো কাজের পুরস্কার হিসেবে খাবার, বিশেষ করে ভাজাভুজি বা মিষ্টি পেতে আরম্ভ করলেই কিন্তু বাচ্চার খাদ্যাভ্যাস বদলাতে আরম্ভ করবে – আগামী দিনেও এই চক্রটা ছেড়ে সে বেরোতে পারবে না। কখনও ভেবে দেখেছেন, কোনও বাচ্চাই সবজি, ফল বা দুধকে আদৌ ভালো মনে করে না কেন? কারণ এগুলো কেউ কখনও প্রাইজ হিসেবে দেয়নি! বাইরে থেকে কেউ বেড়াতে এলেও বাড়ির খুদে সদস্যের জন্য চকোলেট বা আইসক্রিম আনে, স্ট্রবেরি/ কলা আনতে দেখেছেন কাউকে?
. এর ফলে বাচ্চার ওজন বাড়তে আরম্ভ করে খুব তাড়াতাড়ি। ওবেসিটি থেকে টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে বহু অল্পবয়সি শিশু-কিশোর।
. বেশি ভাজাভুজি, মিষ্টি, সফট ড্রিঙ্ক ইত্যাদি খেলে দাঁতের স্বাস্থ্য খারাপ হতে আরম্ভ করে। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, মুখের স্বাস্থ্য ভালো না রাখলে সার্বিক সুস্থতা বজায় রাখা সম্ভব নয়। মিষ্টি খাবার দাঁতের উপরে চটচটে আঠালো স্তর সৃষ্টি করে, তার মধ্যে জীবাণুর বংশবৃদ্ধি হয় দ্রুত।
. মিষ্টি বা ফাস্ট ফুড খেলে মুড ভালো হয়ে যায়। পরবর্তীকালে যখনই মন খারাপ হবে, আপনার সন্তান খাবারেই আশ্রয় খুঁজবে – তাতে শরীর তো বটেই, মনের স্বাস্থ্যেরও দফারফা হবে!
কীভাবে এই সমস্যার সমাধান হবে?
. একেবারে গোড়া থেকেই এসব পাট রাখার দরকার নেই। ভালো ব্যবহারের বিনিময়ে বাচ্চাকে খুব করে আদর করে দিন, তার সঙ্গে খানিকক্ষণ বসে ছবি আঁকুন, বোর্ড গেম খেলুন। কিন্তু ‘তুমি অনলাইন ক্লাস করলে ন্যুডলস বানিয়ে দেব’ বা ‘এক পাতা হাতের লেখা লিখলেই চকোলেট কেক’ এসব বলবেন না। খারাপ অভ্যেস তৈরি না হলে সমস্যাও হবে না।
. পরিবারের সবাই রোজ সুষম, পুষ্টিকর খাবার খান। বাড়িতে হাই ক্যালোরি খাওয়ার চল না থাকলে বাচ্চাও তা খেতে অভ্যস্ত হয়ে পড়বে না।
. বাচ্চাকে নিয়ে রোজ খানিকক্ষণ খেলাধুলো করা জরুরি।
. সন্তানের মুড খারাপ থাকলে তার কারণ খুঁজুন, সেটা ধামাচাপা দেবেন না ভালো ভালো জিনিস কিনে।