ঘাম তো কম-বেশি সবারই হয় – আমাদের শরীরকে প্রাকৃতিকভাবে শীতল রাখে ঘাম। ঘেমে চান করে গেলেন, পাখার নিচে দাঁড়ান – শরীর জুড়িয়ে যাবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, সারাক্ষণ তো আর হাতের কাছে পাখা মজুত থাকে না – সাধারণ মানুষকে আবার অফিসের মিটিং বা বিয়েবাড়ি ইত্যাদিতে গিয়ে লোকের মুখোমুখি দাঁড়াতেও হয়। তখন গা জবজবে ঘাম হলে ভালো দেখায় না। কারও কারও ঘামে বিশ্রি গন্ধ হয় – সেটা আরও বড়ো শিরঃপীড়া।
যেহেতু ঘাম একটা স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া, তাই তার উপর খোদকারি করতে গেলে কিন্তু নিজেকেই ভুগতে হবে। যাঁদের ঘাম হয় না বলে আপনি হিংসে করেন, তাঁদের শরীর ঝটপট গরম হয়ে যায়, হিট র্যাশ বেরোনোও বিচিত্র নয়। তাই আন্ডারআর্মের ঘাম চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে – এমন অ্যান্টি পার্সপিরান্ট কিনবেন না, লাগাবেনও না।
. যাঁরা থাইরয়েড বা অন্য কোনও হরমোনের সমস্যায় ভুগছেন, ওজন বেশি, শরীরের আকার বড়ো, ডায়াবেটিস আছে, মেনোপজ হবে বা নির্দিষ্ট কোনও ওষুধ খাচ্ছেন – তাঁদের ঘাম বেশি হবে, এটাই স্বাভাবিক। রাতারাতি সেটা কমবে না — বেশি করে জল খান, বিশেষত বাইরে ঘুরে যেদিন কাজ করবেন, সেদিন জল, ডাবের জল, আখের রস, শরবত ইত্যাদি খাবেন বার বার। তাতে গায়ে গন্ধ হওয়ার আশঙ্কা কমবে।
. বেশি তেল-মশলা খাবেন না, তাতে ঘাম বাড়ে। চেষ্টা করুন শরীর ঠান্ডা রাখার। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর মৌরি ভেজানো জল খান – মৌরি শরীর ভিতর থেকে ঠান্ডা রাখে। চিনি বা যে কোনও মিষ্টি খাবার, অতিরিক্ত নুন, মাছ-মাংস ঘামের পরিমাণ বাড়াবে।
. নারী-পুরুষ উভয়েরই অন্তর্বাসের লাইন বরাবর বাড়তি ঘাম হয় – তাই এক অন্তর্বাস বেশিক্ষণ পরে থাকবেন না। স্যাঁতস্যাঁতে পরিস্থিতি পেলে চর্মরোগ হবে – বিশেষ করে থাইয়ের ভিতর দিকে এমনটা হওয়ার আশঙ্কা সবচাইতে বেশি। স্নানের পর ভালো করে গা মুছুন, অ্যান্টিসেপটিক লোশন বা পাউডার লাগিয়ে জায়গাটা ঝরঝরে রাখুন।
. অনেকের পা খুব ঘামে – যদি ঢাকা জুতো পরার অভ্যেস থাকে, তা হলে পা ভালো করে মুছে পাউডার লাগিয়ে নিন। তারপর ফ্রেশ সুতির মোজা পরুন। রোজ মোজা বদলাতে হবে, বাড়ি ফেরার পর জুতো খোলা হাওয়ায় রাখুন। রোজ এক জুতো পরবেন না, তাতে গন্ধ বেশি হবে।
. সুতি, লিনেন ছাড়া অন্য কোনও মেটিরিয়ালের পোশাক গরমকালে পরবেন না।
. দিনে অন্তত দু’বার স্নান করুন এবং পোশাক বদলান – না হলে ঘামাচি হতে পারে।
. প্রচুর ট্যালকম পাউডার লাগালে বিশেষ কোনও সুবিধে হয় না। পাখার নিচে যখন থাকবেন, তখন সামান্য পাউডার লাগানো যায়। ট্যালকম পাউডারে অ্যাসবেস্টস নামক একটি উপাদান থাকে – সেটি স্বাস্থ্যের জন্য খুব একটা ভালো নয়, এমন অভিযোগ আছে।