কোভিড পরীক্ষার সময়ে নাক আর মুখ থেকে লালারস সংগ্রহ করা হয়, তাই তো? তার মানে হচ্ছে, মুখে-গলায় এই ভাইরাস বাসা বাঁধে একেবারে গোড়ার দিকে, সেখানেই বংশবিস্তার করে। তার পর হয় শ্বাসনালী বেয়ে ফুসফুসে, না হলে খাদ্যনালী বেয়ে পাকস্থলী বা অগ্ন্যাশয়ে গিয়ে জাঁকিয়ে বসে করোনা ভাইরাস।
দেশ-বিদেশের নানা গবেষকের ধারণা, যে সব রোগীর মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য ভালো, তাঁদের বেশিরভাগের সংক্রমণই খুব জটিল জায়গায় গিয়ে পৌঁছচ্ছে না। তবে এখনও এ বিষয়ে শেষ কথা বলার সময় আসেনি, আরও গবেষণা হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু সময় থাকতে সাবধান হওয়াতে দোষ তো নেই!
দাঁত বা মাড়ির স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা খুব মাথা ঘামাই না কখনওই। স্রেফ দিনে দু’বার ব্রাশ করলেই কাজ শেষ হয় না, নিয়মিত ফ্লস ব্যবহার করা উচিত – তাতে দাঁতের ফাঁকে ফাঁকে আটকে থাকা খাবারের টুকরো বেরিয়ে যায়। খাবার আটকে থাকলে তার সঙ্গে লালারস মিশে প্লাকের আস্তরণ তৈরি হয়। আর এই সমস্ত কারণে মাড়ি দুর্বল হতে থাকে। বুঝতেই পারছেন, এই অবস্থায় যদি ভাইরাস আপনার মুখে প্রবেশ করে, তা হলে সে সহজেই জাঁকিয়ে বসবে?
ইংল্যান্ডের ‘জার্নাল অফ ওরাল মেডিসিন অ্যান্ড ডেন্টাল রিসার্চ’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, যাঁরা জিঞ্জিভাইটিসের মতো মাড়ির কোনও সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের রক্তে করোনা ভাইরাস মিশেছে অনেক তাড়াতাড়ি, ফুসফুসের ক্ষতিও হয়েছে দ্রুত। এমন কতগুলি সহজ ও সস্তা উপায় আছে, যা আপনার মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য ভালো রাখবে।
. ইন্টারডেন্টাল ব্রাশ ব্যবহার করলে দাঁতে প্লাক জন্মাতে পারে না।
. মাড়িতে কোনও সমস্যা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শে বিশেষ মাউথওয়াশ ব্যবহার করা উচিত।
. মাউথওয়াশ না থাকলে সামান্য গরম জলে নুন ফেলে ভালো করে মুখ কুলকুচো করে নেওয়া উচিত।
. ভালো করে চিবিয়ে ফল খেতে হবে রোজ। পেয়ারা, শসা, ডাঁটা চিবোনো মুখের স্বাস্থ্যের পক্ষে খুব ভালো।
. দাঁত নড়লে, ব্যথা হলে বা মুখে বিশ্রি গন্ধ হলেই ডেন্টিস্টের কাছে যাবেন না, মাঝে-সাঝে গিয়ে তাঁর পরামর্শ নিন।
. পান, তামাকজাত দ্রব্য সেবন আপনার ওরাল হেলথের শত্রু।
. চকোলেট বা মিষ্টি জাতীয় কিছু খেলে দাঁত মেজে নিন অবশ্যই।