যে কোনওদিন আছড়ে পড়বে কোভিডের তৃতীয় ঢেউ, এমন একটা পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে রয়েছি আমরা। সেই সঙ্গে এবার ঘোর বর্ষা হচ্ছে, আর জমিয়ে ব্যাট করছে ভাদ্রের পচা গরম। দুপুরে ভ্যাপসা গরমে টেকা যাচ্ছে না, বিকেলে এক রাউন্ড বৃষ্টি হলে রাতের দিকে শিরশিরানি অনুভব হচ্ছে স্পষ্ট। দু’ পা জোরে হাঁটলে ঘামে জামা ভিজে যাচ্ছে, আবার বাড়ি এসে ঠান্ডা জলে গা ধুলে গলা খুসখুস অনিবার্য।
পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক অবস্থানটাই এমন যে মশাবাহিত রোগ আমাদের শত শত বছর ধরে ভুগিয়ে এসেছে, ম্যালেরিয়ার মহামারিতে গ্রামের পর গ্রাম উজাড় হওয়ার গল্প শোনেননি, এমন কেউ আছেন নাকি? গত কয়েক বছরের দাপটে অবশ্য ডেঙ্গিও খুব পিছিয়ে থাকবে না।
মশকবাহিত রোগ কিন্তু একটু সচেতন হলেই এড়ানো যায়। আপনি যদি বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখেন, কোথাও জল জমে থাকতে না দেন, রাতের বেলা মশারি টাঙিয়ে শোন, তা হলে কিন্তু অনেকটাই নিরাপদ থাকতে পারবেন। এবার লকডাউনের দিনগুলি সহনীয় করে তোলার জন্য অনেকেই বাড়িতে বা বারান্দায় গাছ লাগিয়েছেন, ভাঙা টবের টুকরো-টাকরা চারদিকে যেন ছড়িয়ে না থাকে, তা নিশ্চিত করুন।
আর এক কালপ্রিট হচ্ছে ডাবের খোলা। যেখানে-সেখানে এসব ফেলবেন না, এর ফাঁকফোকরে জল জমে মশার আদর্শ ব্রিডিং গ্রাউন্ড তৈরি হয়। আর একবার ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়ার প্রকোপ শুরু হলে কিন্তু তা হু হু করে বাড়তেই থাকবে – সামলাতে প্রশাসনকে মাঠে নামতে হয় শেষে।
. এই অবস্থায় জ্বর, গা-হাতে ব্যথা, অরুচি হলে বাড়িতে ইচ্ছেমতো ওষুধ খাবেন না, আতঙ্কিত হবেন না। ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। তাপমাত্রার ওঠা-পড়ায় সাধারণ ঠান্ডা লাগতে পারে, হতে পারে ভাইরাল ফিভার। ইনফ্লুয়েঞ্জা হওয়াও কিছু বিচিত্র নয়।
. ডাক্তারের বলে দেওয়া রক্ত পরীক্ষা করান, নির্দিষ্ট ওষুধ খান, নিয়ম মেনে চলুন। দুর্বল শরীরে যদি ফের কোভিড আঘাত হানে, মারাত্মক বিপদ হবে।
. সাধারণ ঠান্ডা লাগা বা ইনফ্লুয়েঞ্জার ক্ষেত্রে কিন্তু গন্ধ বা স্বাদের বোধ পুরোপুরি চলে যায় না। তবে নাক সুড়সুড় করে, কাঁচা জল পড়ে, মাথা ভার হয়ে থাকে।
. দেখা যাচ্ছে, কোভিড প্রতাপ দেখাতে আরম্ভ করার পর থেকে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন নেওয়ার হার অনেকটাই কমে গিয়েছে। এই ভ্যাকসিন প্রতি বছর নিতে হয়, কারণ অ্যান্টিজেন বদলায়। যাঁদের বয়স বেশি, কো-মর্বিডিটি আছে, সিওপিডিতে ভোগেন, তাঁরা ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে এই টিকা নেওয়ার কথা ভাবতে পারেন।
. কোনও জ্বরকেই হেলাফেলা করবেন না। ডাবল ইনফেকশন কিন্তু ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই সাবধানে থাকুন। বাড়িতে কারও জ্বরজারি হলে অন্যরা সাবধান হয়ে যান।
. বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখুন, জল জমতে দেবেন না।