এ কথা নানা গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, গত কয়েক দশকে মানুষের ঘুমের মান আগের চেয়ে অনেকটাই খারাপ হয়েছে – নিশ্চিন্ত নিদ্রা বলতে ঠিক কী বোঝায়, তা আজকের যুগে অনেকেই জানেন না। তার ফলে আমাদের শরীরেও বাসা বেঁধেছে নানা ব্যাধি। যেমন ধরুন, হরমোনের সমস্যা, মনঃসংযোগের অভাব, ওজন বাড়া, বেশি খাওয়া ইত্যাদি। তার ফলে ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশনের মতো নানা অসুখ বিব্রত করবে পরবর্তীকালে।
তাই সঠিক ডায়েট মেনটেন, অ্যাকটিভ লাইফস্টাইলের পাশাপাশি আপনাকে শরীরকে পূর্ণ বিশ্রাম দিতে হবে। রোজ নির্দিষ্ট সময়ে শুতে যাওয়া আর ঘুম থেকে ওঠার অভ্যেস গড়ে তুলুন। যাঁদের বারবার ঘুম ভাঙে মূলত বাথরুম যাওয়ার জন্য, তাঁরা সন্ধে সাতটার আগে বেশিরভাগ জল খেয়ে নিন। শুতে যাওয়ার আগে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার বা টেলিভিশন দেখা কমাতে হবে।
. দিনের বেলা উজ্জ্বল আলোয় থাকুন, সন্ধের পর থেকে তীব্র আলোর ব্যবহার কমান। ফোনে, ইলেকট্রনিক ডিভাইসে ব্লু লাইট ফিল্টার লাগাতে পারলে ভালো। চড়া আলো মেলাটোনিন হরমোনের স্বাভাবিক ক্ষরণে বাধা দেয়, ফলে আপনার চট করে ঘুম আসবে না।
. সন্ধের পর বেশি কফি খাবেন না, ক্যাফেইন নার্ভাস সিস্টেমকে উত্তেজিত রাখে। শরীরে থাকে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা। ইন ফ্যাক্ট, রাতে শোওয়ার আগে যাঁরা দুধ খান, তাঁরাও একটু সাবধান। দুধে কেসিন নামক একটি প্রোটিন থাকে, তা হজম করতে অনেকেরই অসুবিধে হয়। বেশি রাতে দুধ খেলে শরীরে আইঢাই-ভাব টের পাবেন হয়তো। সেক্ষেত্রে দুধ বন্ধ করে দিন।
. রাতে যাঁরা মদ্যপান করেন, তাঁরাও সাবধান। মদের কারণেও আপনার ঘুমের অসুবিধে হতে পারে। সবচেয়ে ভালো হয় তাড়াতাড়ি রাতের খাওয়াটা সেরে নিতে পারলে, তারপর অল্প পায়চারি করুন। তাতে হজমের সুবিধে হবে। এর ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে শুয়ে পড়তে পারলে ভালো হয়।
. দুপুরে এক-আধদিন ঘুমিয়ে পড়লেন আলাদা কথা, রোজ দিবানিদ্রা দিলে কিন্তু রাতে ঘুম আসতে সমস্যা হতে পারে। তবে এখন যা গরম পড়েছে, সবাইকেই জানলার পর্দা টেনে রাখতে হচ্ছে, আবছায়া আলো আঁধারি দেখলেই মেলোটোনিনের ক্ষরণ বাড়ে, তাই ঘুম পাওয়া স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে টাইমার সেট করে ঘুমোতে যান, আধ ঘণ্টার বেশি দিবানিদ্রার প্রয়োজন নেই।
. যাঁরা রাত জেগে ওয়েব সিরিজ দেখেন, তাঁদের ঘুমের সমস্যা হবেই – কিছু করার নেই। আর হ্যাঁ, এটা ভাবলে ভুল করবেন যে বছরের পর বছর দিনে ঘুমিয়ে রাতে জাগলে সুস্থ থাকা সম্ভব। আর কিছু হোক না হোক, আপনার মেটাবলিজম নিয়ে সমস্যা হবেই।
. ঘুমোতে যাওয়ার আগে স্নান করলে ভালো ফল পাবেন। আপনার শরীর ঠান্ডা, রিল্যাক্সড হবে। স্নানের জলে ল্যাভেন্ডারের তেল মিশিয়ে নিতে পারলে খুব ভালো হয়। তার পর ভালো করে ময়েশ্চ্রাইজার লাগিয়ে শুতে যান।