খুব ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে বাড়ির কাছের পার্ক বা ছাতে উঠে খানিক হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম করার অভ্যেসটাকে খুব স্বাস্থ্যকর বলেই মনে করা হয়। কিন্তু আসন্ন শীতকালে সুস্থ থাকতে চাইলে ভোরে বাড়ির বাইরে না বেরনোর পরামর্শ দিচ্ছেন ডাক্তাররা। কারণগুলো খতিয়ে দেখলেই বুঝতে পারবেন যে, হালের করোনা পরিস্থিতি এবং মরশুম বদলজনিত সর্দি-কাশি-জ্বরের সঙ্গে পাল্লা দিতে গেলে রোজের রুটিনে কিছু পরিবর্তন আনা জরুরি।
ভোরের বাতাসে দূষণ কণার মাত্রা বেশি। শীতের রাতে তাপমাত্রা নামে খুব দ্রুত গতিতে, বাতাস ভারী হয়ে যায় – তাই দূষণ কণিকাগুলিও মাটির কাছাকাছিই অবস্থান করে। ভোরবেলা হাঁটা বা ব্যায়ামের জন্য আপনি বাইরে বেরোলে লাভ তেমন নেই, উলটে ফুসফুসের ক্ষতিই হবে। রোজ ভোরের ভারী বাতাসের সংস্পর্শে এলে সিওপিডি বা শ্বাসনালীর অন্য কোনও অসুখে ভোগা রোগীর বিপদ বাড়ার কথা, সুস্থ মানুষও আক্রান্ত হতে পারেন সর্দি-কাশিতে।
তা হলে কি ব্যায়াম করা আপাতত মুলতুবি থাকবে? একেবারেই না। ডাক্তারদের বক্তব্য হচ্ছে, ভোরে নয়, হাঁটতে যান বিকেলবেলায়। দিনের তাপে বাতাস হালকা হয়, দূষণকণা উঠে যায় উপরের দিকে। তাই খোলা হাওয়ায় ব্যায়াম করার অভ্যেস থাকলে সময় বদলান, হাঁটুন বিকেলে। শেষ দুপুরের রোদ গায়ে লাগাতে পারলে বাড়বে আপনার ইমিউনিটিও।
ঘরের ভিতরের বাতাস পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য জানলা-দরজা খুলে রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফেও। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও খেয়াল রাখবেন, খুব সকালে বা সন্ধে নামার পরে জানলা খুলে রাখার প্রয়োজন নেই। দিনের আলো থাকতে থাকতে ঘরে যতটা আলো বাতাস আসে, ততটাই যথেষ্ট।
যাঁরা একেবারে নিচের তলায় থাকেন, আশপাশে গাছপালা তেমন নেই এবং দূষণের মাত্রাও বেশি — তাঁদের বাড়িতে সিওপিডি বা অ্যাস্থমার রোগী থাকলে এয়ার পিউরিফায়ার বা ফিল্টার লাগিয়ে নেওয়ার কথা ভাবতে পারেন। তবে ফিল্টার পালটাতে হবে নিয়ম করে, সেখানে যেন ধুলো-ময়লা না জমে থাকে, সে খেয়াল রাখুন।
বাড়িয়ে বসে ধূমপান করলে কিন্তু ঘরে দূষণের সমস্যা বাড়বে। বিশেষ করে শীতের দিনে ঠান্ডার প্রকোপ আটকাতে জানলা-দরজা বন্ধ করে রাখা হয়, তাই ঘরের পর্দা, বিছানার চাদর ইত্যাদি সারফেসেও ধোঁয়া আটকে থাকে। সেই সঙ্গে বাতাসের দূষণের পরিমাণ কমানোর চেষ্টাও করতে হবে। জীবাশ্ম জ্বালানির খরচে রাশ টানুন, বাড়াতে হবে শক্তির অচিরাচরিত উৎসের ব্যবহার।