হ্যাঁ, এ কথা ঠিক যে ফ্রিজে রেখে কোনও জিনিসই বেশিদিন খাওয়া উচিত নয়। সব সময় মরশুমি ফল-সবজিই খাওয়া ভালো। কিন্তু কী জানেন, ঘোর গ্রীষ্মেও এক-আধদিন কড়াইশুঁটি দেওয়া ছানার ডালনা বা পোলাও খাওয়ার ইচ্ছে হতে পারে! স্ট্রবেরি জ্যাম বা কমলালেবুর মার্মালেড খাওয়ার শখ হওয়াটা কিছু বিচিত্র নয়। তেমন কিছু হলে কী করবেন?
এখন বাজারে যে সব সবজি বা ফল পাওয়া যাচ্ছে, তার মধ্যে অনেকগুলিকেই আপনি সংরক্ষণ করে রাখতে পারবেন পরের মরশুম পর্যন্ত। আর তার প্রক্রিয়াটাও মোটেই কঠিন নয়। সনাতন কাল থেকে রোদ, তেল, নুন, লেবুর রস বা ভিনিগার দিয়ে ফল, সবজি, মাছ, মাংস – সব সংরক্ষণ করে রাখা যায় দিনের পর দিন। যে সব জায়গায় শীতে খুব ঠান্ডা পড়ে বা বর্ষার বৃষ্টিতে চরাচর ভেসে যায়, সেখানে হাতের কাছে কিছু শুকনো উপকরণ না থাকলে চলে?
সংরক্ষণের প্রক্রিয়াও খুব সহজ। যেমন ধরুন টোম্যাটো। একটু ছোটো আকারের টোম্যাটো কিনুন বাজার থেকে। ভালো করে ধুয়ে সামান্য নুন মাখিয়ে রোদে শুকোতে দিন। টোম্যাটোর রস ধীরে ধীরে মরতে আরম্ভ করবে, মাঝে মাঝে উলটে দেবেন। ব্যস, তিন পাঁচেকের মধ্যেই আপনার সান ড্রায়েড টোম্যাটো রেডি হয়ে যাবে! টোম্যাটোর পিউরি তৈরি করে থালায় ঢেলেও এভাবে খুকিয়ে নিতে পারেন – ঠিক যেভাবে আমসত্ত্ব বানানো হয়।
এইভাবেই আমলকী কেটে শুকিয়ে রাখতে পারেন। কড়াইশুঁটি ছাড়িয়ে জিপলক ব্যাগে ভরে স্টোর করে রাখুন ফ্রিজের সবচেয়ে ঠান্ডা জায়গায়। এইভাবেই ফুলকপি, গাজরও কেটে রাখা যায়, তা বের করে বরফ ছাড়িয়ে নিয়ে রান্না করলেই হবে। মেথি পাতা শুকিয়ে রাখুন – বাজার থেকে আর কসুরি মেথি কেনার দরকার পড়বে না।
স্ট্রবেরি কিনে এনে কেটে এক চিমটে নুন আর পর্যাপ্ত চিনি বা সুপার ফ্রি মিশিয়ে রেখে দিন সারারাত। পরদিন খুব ভালো করে ফুটিয়ে জল শুকিয়ে নিয়ে লেবুর রস মেশান, তৈরি হবে আপনার স্ট্রবেরি জ্যাম। কমলালেবু, কালো আঙুর দিয়েও এরকম জ্যাম বানানো সম্ভব। এবার এই প্রিজার্ভ ঠিকভাবে ফ্রিজে রাখুন, মাঝে মাঝে ফুটিয়ে নেবেন। এ দিয়ে আপনি পরে আইসক্রিম, চিজকেকও বানাতে পারবেন, জ্যাম হিসেবে তো খাওয়াই যায়!
আচার বানান কুল বা পাকা চালতা দিয়ে। প্রথমে ধুয়ে ভালো করে রোদে শুকিয়ে নিন ক’দিন। সামান্য নুন মাখাতে পারেন এই পর্বে। তার পর গুড় দিয়ে পাক করে নিতে পারেন। সাধারণত পাঁচফোড়ন আর সরষের গুঁড়ো আচারের মূল মশলা। সঙ্গে লঙ্কা আর জিরে ভেজে নিয়ে গুঁড়ো করেও মেশান অনেকে। যাঁরা মিষ্টি আচার পছন্দ করেন না, তাঁরা মশলার গুঁড়ো দেওয়ার পর গরম করে ফের ঠান্ডা করে নেওয়া সরষের তেল ঢালুন আর খুব ভালো করে রোদ খাইয়ে নিন।