রক্তে চিনির মাত্রা বেশি হলেই বিপদ – তা নিশ্চয়ই বার বার দেখেছেন পত্র-পত্রিকায়, মিডিয়ায়? কিন্তু কীভাবে তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে তা বুঝতে পেরেছেন কী? খুব সহজ কতগুলো উপায়ের সন্ধান দিচ্ছি আমরা – যাঁদের ওজন সংক্রান্ত সমস্যা নেই, তাঁরা সুফল পাবেন সহজে।
১. আপনার রোজের খাদ্যতালিকায় ফাইবারের পরিমাণ বাড়ান
তার কারণ, ফাইবার পেট ভরিয়ে রাখে। যে সব খাবারে ফাইবার বেশি থাকে, সেগুলি হজম করতে আপনার শরীরকে বেশি এনার্জি খরচ করতে হয়। তাই বার বার বলা হয়, রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণের জন্য বেশি করে ফল আর শাকসবজি খাওয়া উচিত। সবজি সেদ্ধ করে খেতে পারেন, ভালো করে ধুয়ে স্যালাড ও খাওয়া যায়। রোজের খাদ্যতালিকায় অন্তত দুই রকম ফল আর তিন রকম সবজি রাখুন।
কী ভাবছেন? খরচ বাড়বে? আপনাকে দামী ফল-সবজি খেতে হবে না। লাউ, পটল, ভিন্ডি, উচ্ছে, কলমি বা নটে শাক, পেঁপে, শসা, পেয়ারা, কালোজাম, আনারসই যথেষ্ট। যাঁদের ব্লাড সুগারের সমস্যা আছে, তাঁরা লিচুও খেতে পারেন।
২. এমন খাবার খান, যার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম
রোলড ওটস, নানা ধরনের ডাল, দালিয়া, বিনস, দইয়ের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হয়। অর্থাৎ তা খেলে রক্তে চিনির মাত্রা হুট করে বেড়ে যায় না। বেশিরভাগ সবুজ শাকসবজিও লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স। আপনাকে এমন কার্বোহাইড্রেট বাছতে হবে যা নন-রিফাইন্ড। যেমন ভুষি-শুদ্ধ আটার রুটি খেতে পারেন। যাঁদের তা হজম হয় না, তাঁরা লাল চালের ভাত খান।
৩. খাবারের পরিমাণ কমান
রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের আর একটা খুব সহজ উপায় হল কম খাওয়া। আপনি আগে দুটো রুটি খেতেন? এখন একটা খান। তিন হাতা ভাত নিতেন? এখন দেড় হাতার উপরে উঠবেন না। বাকিটা স্যালাড, ফল, সেদ্ধ আনাজ দিয়ে ম্যানেজ করুন। বারে বারে খান – দু’ ঘণ্টা বাদ দিয়ে অল্প একটু দই, ডাল সেদ্ধ, একটু স্যালাড, ছোলা সেদ্ধ খেলেই দেখবেন ওজন কমতে আরম্ভ করেছে।
৪. জল খান প্রচুর পরিমাণে
খাবার খাওয়ার আধ ঘণ্টা আগে আর এক ঘণ্টা পরে হচ্ছে জল খাওয়ার সেরা সময়। হুট করে খিদে পেলেও আগে একবার জল খেয়ে নিন। অল্প গরম জল সিপ করে করে খেলেও কোভিড থেকে সেরে ওঠার পর খুব আরাম পাবেন।
৫. প্রতিদিন ব্যায়াম করুন
এই একটা জায়গায় কোনও ছাড় দেবেন না, তা হলে নিজেকে ঠকানো হবে। কম খাওয়া আর ব্যায়াম আপনার মেটাবলিজম বাড়াবে। তার ফলেই নিয়ন্ত্রণে থাকবে রক্তে চিনির মাত্রা। রোজ সকালে আর বিকেলে বাড়ির ছাদে বা লনে হনহনিয়ে হাঁটুন। গা দিয়ে যেন ঘাম ঝরে।
. কোনও প্রসেসড ফুড, রেস্তোরাঁর খাবার, ভাজাভুজি খাবেন না।
. খুব ইচ্ছে হলে অল্প মিষ্টি খেতে পারেন, কিন্তু সেটা দিনের বেলায় খেতে হবে।
. বেশি রাত করে খাবেন না – যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডিনার সারুন।
. কার্বোহাইড্রেট বেশি খেলেই বিপদে পড়বেন। দিনের যে কোনও সময়েই আপনাকে কার্বোহাইড্রেটের সঙ্গে ভালো মানের প্রোটিন আর ফাইবার খেতে হবে।