সুস্থ থাকতে কে না চায়? আর শারীরিক ফিটনেস ধরে রাখতে গেলে রোজ কিছু না কিছু ব্যায়াম করার পরামর্শ দেওয়া হয় সব বয়সের নারী ও পুরুষকেই। আসল কথা হচ্ছে, আপনাকে সারাক্ষণ অ্যাকটিভ থাকতে হবে, সচল রাখতে হবে শরীরের সর্ব অঙ্গ। তা হলেই বজায় থাকবে সুস্থতা।
যাঁরা সংসারের কাজকর্ম করেন রোজ, সিঁড়ি ভেঙে ওঠানামা করতে পারেন স্বচ্ছন্দে, দিনের শেষে বেশ খানিক হাঁটাচলাও হয়ে যায় নানা কাজে, তাঁদের আলাদা করে ব্যায়ামের জন্য সময় না দিলেও হয়তো চলবে।
কিন্তু যাঁরা বাড়িতে বসে দিনের বেশিরভাগটা কাটাতে বাধ্য হন, অথবা টানা চেয়ারে বসে অফিসের কাজ করতে হয় – তাঁদের কিন্তু কেবল এটুকুতেই হওয়া সম্ভব নয়। আপনাকে খুব স্মার্ট প্ল্যানিং করতেই হবে যদি সুস্থ থাকতে চান বেশিদিন।
ব্যায়াম কেবল বাড়তি ওজন কমাতেই সাহায্য করে না, তা আপনাকে সুস্থ রাখে, বাড়ায় ফ্লেক্সিবিলিটি। ফলে চেহারা টানটান থাকে। শরীরে বাড়তি মেদ থাকলে রক্তচাপ, শর্করা, কোলেস্টেরলের পরিমাণ সবই ঊর্ধ্বমুখী হবে। তাই ব্যায়াম আর খাওয়াদাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ, দুটোই একইরকম গুরুত্বপূর্ণ।
নিজের মাথায় একটা সহজ হিসেব একেবারে পরিষ্কার রাখুন – দিনে যতটা ক্যালোরি শরীরে প্রবেশ করছে, তার চেয়ে সামান্য বেশি যেন খরচ হয়ে যায়। অনেকেই বলবেন, অত সচেতন থাকা সম্ভব না। কিন্তু অসুস্থ হয়ে পড়ার চেয়ে তো সাবধানতা ভালো, তাই না? ছোট ছোট কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে কেবল।
ট্রাই করেই দেখুন না – আমরা খুব সহজ কতগুলো ধাপ বলে দিচ্ছি।
১. আপনি যতক্ষণ জেগে আছেন, কাজকর্ম করছেন, ততক্ষণ ক্যালোরি খরচ হচ্ছে, মেটাবলিজমও কাজ করছে যথাযথভাবে। তাই লুচি বা পেঁয়াজি খেতে হলে দিন থাকতে থাকতে খেয়ে নিন। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে কমিয়ে দিতে হবে খাওয়ার পরিমাণ।
২. যদি দেখেন বারবার বদ হজম হচ্ছে, পেট ভারী হয়ে থাকছে, খিদে পাচ্ছে না, তা হলে সতর্ক হোন, ডাক্তারের পরামর্শ নিন। কোনও বিশেষ খাবারে অ্যালার্জি থাকলে এমনটা হতে পারে, আবার জটিল কোনও রোগের পূর্বলক্ষণ হওয়ার আশঙ্কাও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। পেট ভালো তো সব ভালো, এই আপ্তবাক্য মনে রাখবেন সব সময়ে।
৩. যাঁদের বাচ্চা আছে বা বয়স্কদের দেখভাল করতে হয়, তাঁদের পক্ষে হাঁটার জন্যও বাড়ির বাইরে বেরনো মুশকিল, এ কথা খুব সত্যি। জানেন কি, দুবাইয়ে বসবাসকারী দক্ষিণ আফ্রিকান দম্পতি কলিন আর হিলডা অ্যালিন এই লকডাউনে কী করেছেন? অ্যালিন দম্পতি তাঁদের ১৯ মিটার লম্বা ব্যালকনিতে ম্যারাথন দৌড়ে কায়েম করেছেন এক রেকর্ড।
২৬ মাইল দৌড়তে তাঁদের সময় লেগেছে আট ঘণ্টা। এই অবসরে তাঁদের জল আর খাবার জুগিয়ে মনোবল বাড়িয়েছে কিশোরী কন্যা জিনা। অ্যালিন দম্পতি কাজটা করেছিলেন একটাই কারণে – যেন ঘরবন্দি মানুষ ফিট থাকার ইচ্ছেয় জলাঞ্জলি না দেন। ঘরেই পায়চারি করুন না, কে আটকাবে আপনাকে?
৪. ফোনে ডাউনলোড করুন ফিটনেস অ্যাপ। সারাদিনে কতটা হাঁটছেন, তা মাপতে পারবেন। সাধারণত বলা হয় দিনে ১০,০০০ পা হাঁটা উচিত যে কোনও সুস্থ মানুষের। সিঁড়ি ভাঙলেও চলবে। তবে হাঁটু বা গোড়ালিতে কোনও ব্যথা হলে হাঁটা বন্ধ রাখুন কিছুদিনের জন্য।