সকালে ঘুম থেকে উঠে ধূমায়িত এক পেয়ালা গরম চা ছাড়া দিন শুরু হয় না অনেকের। চায়ের উষ্ণতা আর স্বাদ কাটিয়ে দেয় শরীরের জড়তা, চনমনে হয়ে ওঠে স্নায়ুকোষ। শুধু সকালই বা কেন, সারাদিন ধরে কাজের ফাঁকে ফাঁকে চায়ে চুমুক দেওয়ার নেশা আমাদের কতজনের আছে বলুন তো! কাজের চাপে অন্য কিছু খাওয়া হোক বা না হোক, চা চাইই! কিন্তু অত্যন্ত স্বাভাবিক এই কাজটা করতে গিয়েই হতে পারে বড় ধরনের শারীরিক বিপত্তি। এমনকী, সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রথম পানীয় হিসেবে চা খেলেও দেখা দিতে পারে নানা সমস্যা। সাতসকালে খালি পেটে চা খেলে একদিকে যেমন দিনভর অ্যাসিডিটি থাকতে পারে, তেমনি পেটের উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমে গিয়ে মেটাবলিজম অর্থাৎ বিপাকীয় ক্রিয়াতেও গড়বড় দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক নয়!
তাই সকালে ঘুম থেকে উঠে হোক, বা সারাদিন ধরেই হোক, কেন খালি পেটে চা খাবেন না, তা জেনে নিন ঝট করে!
চায়ের মধ্যে থিওফাইলাইন নামে এক ধরনের রাসায়নিক থাকে, যা থেকে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তাই যাঁরা পেট পরিষ্কার না হওয়ার জটিলতায় ভুগছেন, তাঁরা সকালে উঠেই খালি পেটে চায়ে চুমুক দেওয়ার অভ্যেসটা বাদ দিয়ে দেখুন তো উপকার পান কিনা!
সকালে খালি পেটে চা খেলে শরীরের অ্যাসিড অ্যালকালাইন, অর্থাৎ অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তা থেকে মাথা ঘোরা, বমিভাব, পেশির ব্যথার মতো নানা সমস্যা দেখা দেয়।
সকালে প্রথমেই চা খেলে শরীরের বিপাকীয় ক্রিয়ায় প্রভাব পড়ে, ফলে সারাদিনে অন্য যে সব খাবার আপনি খান তা থেকে পুষ্টিগুণ শরীরে ঠিকমতো শোষিত হতে পারে না, শরীরে পুষ্টির অভাব দেখা দেয়।
চায়ের ট্যানিনের কারণে অনেকেরই অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দেয়। তা ছাড়া চায়ে খুব সামান্য নিকোটিন থাকে, যে কারণে চায়ের নেশা তৈরি হয়ে যায়।
কীভাবে এড়াবেন এ সব সমস্যা?
উত্তর সহজ, খালি পেটে চা খাওয়া চলবে না, এমনকী সকালেও না। দিন শুরু করুন এক গেলাস জল খেয়ে। তার অন্তত মিনিট পনেরো পরে খান কয়েকটা বাদাম বা একমুঠো ভেজানো ছোলা বা মুগ। তারও পনেরো মিনিট পরে চা খেতে পারেন, কিন্তু সঙ্গে যেন অবশ্যই হালকা বিস্কুট বা মুড়ির মতো কিছু থাকে। একইভাবে সারাদিন চা খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকেও খাবার খেতে ভুলবেন না, আর কোনওমতেই অতিরিক্ত চা খাওয়া যেন না হয়ে যায়, সেদিকে খেয়াল রাখুন।