বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞান পত্রিকা ‘দ্য ল্যানসেট’-এ সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে এক বিশ্বব্যাপী গবেষণার ফল এবং তাতে এই মারণ রোগের কয়েকটি প্রমাণিত ‘রিস্ক ফ্যাক্টর’-কে দাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেকেই হয়তো বলবেন, এই তথ্য মোটেই অভ্রান্ত নয়। তবে ল্যানসেটের এই গবেষণা দাঁড়িয়ে আছে ২০১৯ সালের গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিজ, ইনজুরিস অ্যান্ড রিস্ক ফ্যাক্টর-এর উপর এবং যে ঝুঁকিগুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছে তা মূলত ব্যবহারিক, প্রাকৃতিক, বিপাকীয় বা পেশাগত।
১. ধূমপান
২. মদ্যপান
৩. বেশি ওজন
৪. অসুরক্ষিত যৌনতা
৫. হাই ফাস্টিং প্লাজমা গ্লুকোজ
৬. দূষণ
৭. পেশাগত কারণে শরীরে অ্যাসবেস্টসের প্রবেশ
৮. হোল গ্রেন বা ভুষিযুক্ত দানাশস্য না খাওয়া
৯. দুধ কম খাওয়া
১০. সেকেন্ড-হ্যান্ড স্মোক
. কেন এই তালিকার শীর্ষে ধূমপানকে রাখা হয়েছে? সিগারেটের ধোঁওয়ায় এমন কিছু উপাদান থাকে যাকে কেমিক্যাল কারসিনোজেন হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। অর্থাৎ সেগুলি নিয়মিত মানুষের দেহে প্রবেশ করলে কোষের স্বাভাবিক কাজকর্ম বিঘ্নিত হয়। এমনকী যাঁরা সিগারেট খান না, তাঁরাও কোনও ধূমপায়ীর ধারে-কাছে থাকলে স্রেফ ধোঁওয়ার কারণেই অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। সারা পৃথিবীতে ক্যানসারের কারণে যত মানুষ মারা যান, তাঁদের এক তৃতীয়াংশই হয় ধূমপায়ী, না হলে মদ্যপান করেন নিয়মিত বা ওজন বেশি।
. অতিরিক্ত ভাজাভুজি বা বেশি ক্যালোরির খাবার খাওয়া, হাঁটাচলা না করা বা এক জায়গায় দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার অভ্যেস খুব খারাপ। চেষ্টা করুন এমন খাবার খাওয়ার যা প্রাকৃতিক রান্নায় খুব বেশি সময় লাগে না, কিন্তু পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। ফল আর সবজি খাওয়া উচিত, তবে তা খুব বেশি তেল-মশলা দিয়ে রান্না করবেন না।
. লিভার আর সারভাইকাল ক্যানসারের জন্য কালপ্রিট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে হেপাটাইটিস বি, সি ও হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসকে। যাঁরা এইচআইভি আক্রান্ত, তাঁদের সারভাইকাল ক্যানসারের আশঙ্কা গুণ বেড়ে যায়। তাই সুরক্ষিত যৌনতার অভ্যেস থাকা একান্ত জরুরি। সম্ভব হলে ভ্যাকসিন নিয়ে রাখুন।
. আল্ট্রাভায়োলেট রেডিয়েশন থেকে যত দূরে থাকতে পারেন, তত ভালো। বাইরে বেরোলে অবশ্যই সান প্রোটেকশন ব্যবহার করুন।
. মনে রাখবেন, সময়ে ক্যানসার ধরা পড়লে তা সাধারণত সেরে যায়। বিশেষ করে ব্রেস্ট, সারভাইকাল, ওরাল আর কোলোরেক্টাল ক্যানসারে আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থতার হার বেশি। তাই সময় থাকতে ডাক্তার দেখান।
. যাঁরা উপরে বাতলে দেওয়া সমস্ত ঝুঁকি থেকে দূরে থাকেন, তাঁদেরও কিন্তু ক্যানসার হতে পারে। এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই যে নিয়ম মানলেই আপনি ১০০% সুরক্ষিত। কিন্তু ঝুঁকি এড়িয়ে চলা সব সময়েই বুদ্ধিমানের কাজ, তাই না?