আপাতত গোটা পৃথিবীতে যা পরিস্থিতি, তাতে এমন কোনও মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর যিনি পরম আনন্দে, নিশ্চিন্তে আছেন। রোগ আবার প্রবলভাবে ফিরলে লকডাউন হবে কিনা জানা নেই, চাকরি থাকবে? থাকলেও মাইনে সময়ে মিলবে তো? অসুখ হলে হাসপাতালে বেড পাওয়া যাবে কী? ছেলের স্কুলের মাইনে বাড়বে কিনা – কোনও কিছুই জানা নেই কারও। তাই দুশ্চিন্তায় ভোগা স্বাভাবিক।
১. আপনার কি সারাক্ষণ মনে হয় যে আগামী দিনে খুব বড়ো কোনও বিপদ আসতে চলেছে?
এটা ঠিক যে বিপদ কীভাবে আসে, তা আগে থেকে বলা যায় না। কিন্তু সেই আশঙ্কায় যদি আপনি বর্তমানকে উপভোগ করতেই ভুলে যান, তা হলে বুঝতে হবে যে কোনও গভীর সমস্যা হচ্ছে। ধীরে ধীরে আপনার সারাক্ষণ মনমরা লাগবে, জীবনীশক্তি কমতে আরম্ভ করবে, কোনও কাজ করার ইচ্ছেই হবে না একটা সময়ে।
প্রতিকার: ভেবে দেখুন, দুশ্চিন্তা করার সত্যিই কোনও কারণ আছে কী? না আপনি আগে থেকেই প্যানিক মোডে চলে যাচ্ছেন? এভাবে কোনওদিন কোনও সমাধানেই পৌঁছনো যায় না। আপনাকে যুক্তি-বুদ্ধি দিয়ে ভাবনা-চিন্তা করতেই হবে।
২. চিন্তায় রাতের বেলা ঘুম আসছে না?
দিনের পর দিন এমনটা হতে থাকলে কিন্তু শরীর আর মন, দু’য়ের উপরেই প্রভাব পড়বে। ঘুম বাদ দিয়ে আপনার শরীরের চাকা ঘুরবে না, মনও হতোদ্যম হয়ে পড়বে। খুব বেশিদিন এই ব্যাপারটাকে জিইয়ে রাখবেন না। দরকারে কোনও বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিতে হবে।
প্রতিকার: রাতে বেশিক্ষণ মোবাইল বা কম্পিউটারের সামনে বসে থাকবেন না। চেষ্টা করুন সন্ধের দিকে খানিক হাঁটাহাঁটি করার। বাড়ির ছাদে বা লনে সেটা সহজেই করা সম্ভব। তার পর স্নান করে রাতের খাওয়া সেরে একটা বই নিয়ে বসুন। ঘরের আলো কমিয়ে দিন, নিচু ভলিউমে মিউজিক শুনতে পারেন। রাতে খুব হালকা খাবার খাওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়।
৩. কেউ কড়া কথা বললে সেটা গভীরভাবে প্রভাবিত করছে?
আপনি একা নন — খারাপ ব্যবহার সহ্য করতে সবারই অসুবিধে হয়। কিছু কিছু সময়ে যিনি বা যাঁরা খারাপ ব্যবহার করছেন তাঁদের এড়িয়ে চললে সমস্যা মেটে। কিন্তু যখন তা সম্ভব নয়, তখন কী করবেন?
প্রতিকার: যদি অফিসের বসের কাছ থেকে নিত্যদিন কড়া কথা শোনেন, তা হলে একবার নিজের দিকে তাকানো উচিত। আপনি ভয় পেয়ে কাজ করতে গিয়ে বড়োসড়ো ভুল করে ফেলছেন না তো? যদি মনে হয় অকারণ হেনস্থার শিকার হচ্ছেন তা হলে সরাসরি একবার কথা বলুন, এইচআরকেও জানাতে পারেন। চাকরির বাজার এখনও খারাপ, হুট করে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলবেন না। বাড়িতে এ ধরনের সমস্যা চলতে থাকলে কথা বলুন মন খুলে – একটা সমাধান ঠিকই বেরোবে।
৪. নিজেকে সব সমস্যার জন্য দায়ী করছেন?
খামোকা নিজেকে দোষারোপ করে লাভ হবে না কিছু। আপনার জীবনে যা যা সমস্যা আছে, তার সব কিছুর জন্য একমাত্র আপনিই দায়ী নন।
প্রতিকার: জীবনে ভুল সিদ্ধান্ত সবাই নেয়, তার জন্য ভেঙে পড়ে লাভ নেই। ভুল শুধরে নিয়ে কীভাবে এগিয়ে যাওয়া যায়, সে কথা ভাবুন, কাজে দেবে।