হয়তো আপনার ডায়াবেটিস ছিল না কোনওদিন, কোভিডও হালকা ছুঁয়ে গিয়েছে এবং বাড়িতে থেকেই দিব্যি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। সেক্ষেত্রেও কিন্তু সেরে ওঠার পর আপনাকে অতি অবশ্যই বেশ কিছুদিন লাগাতার নিজের ব্লাড সুগার লেভেল চেক করতে হবে, ডাক্তারের পরামর্শে ওষুধ খাওয়াও দরকার।
মুম্বই, পুনের একদল ডাক্তার রীতিমতো হাতে-কলমে প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, যে সব রোগীর ডায়াবেটিসের কোনও পূর্ব ইতিহাস ছিল না, চিকিৎসা চলাকালীন স্টেরয়েডের ব্যবহারও হয়নি, তাঁদেরও রক্তে চিনির মাত্রা বেড়েই থাকছে কোভিড থেকে সেরে ওঠার পর। এটা কেন হচ্ছে, তা নিয়ে অবশ্য স্পষ্ট কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো যায়নি, গবেষণা চলছে।
কোনও কোনও ডাক্তারের বক্তব্য হচ্ছে, কোভিড সম্ভবত প্যানক্রিয়াসে আক্রমণ করছে, ফলে তার বিটা কোষের রুটিন কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটছে। তারই কারণে রক্তে চিনি বাড়ছে। ব্লাড সুগার বাড়লে আরও পাঁচটা সমস্যা তো হয়ই, বাড়ে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও। মিউকর ফাঙ্গাসে কিটোন রিডাকটেস নামক যে এনজাইমটি থাকে, তা বাড়তি চিনি পেলে দ্রুত বংশবিস্তার করে।
একথা নিশ্চয়ই জানেন যে, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের আক্রমণ এখন স্বাস্থ্য বিভাগের বিরাট বড়ো মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে? তার আক্রমণে অনেকেই দারুণ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তাই কোভিড থেকে সেরে ওঠার পরেও খুব সাবধানে খাওয়াদাওয়া করতে হবে, অন্তত তিন মাস রক্তে সুগারের মাত্রা ১৪০-১৬০-এর মধ্যে রাখুন। বেশি করে ফল আর সবজি সেদ্ধ খান, কমান ময়দা, চিনি, ভাতের পরিমাণ। ওটস খাওয়া যায়, লাল চালের ভাতও চলবে।
সবার কাছে তো আর রক্তে চিনির মাত্রা মাপার ইনস্ট্যান্ট ব্যবস্থা থাকে না, তাই নিয়মিত ফাস্টিং আর পিপি চেক করান। সেই সঙ্গে বাড়িতে সেরে ওঠার পর মানুষ আরও একটা ভুল করছেন, ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন না মোটে – এমনটা করবেন না।
হোম আইসোলেশনে থেকে কোভিডমুক্ত ওঠার পরে অন্তত মাস তিন চারেক আপনাকে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে। আপনার হার্ট, লাং, কিডনি ঠিকঠাক কাজ করছে এবং আপনি বিপন্মুক্ত – এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া দরকার। এখন তো মুখোমুখি কনসাল্টেশন প্রায় হচ্ছেই না, তাই ফোনেই কথা বলে দরকারি টেস্ট করিয়ে নিন।