একদিকে অতিমারির চাপ – মিডিয়ায় অনবরত ভেসে আসছে ভয় পাইয়ে দেওয়ার মতো খবর, মৃত্যু মিছিল চলছে গোটা দেশ জুড়ে। তার উপর সারাক্ষণ তাড়া করে বেড়াচ্ছে কাজ হারানোর আতঙ্ক। বহু মানুষ ছাঁটাই হয়েছেন, যাঁরা চাকরি টিকিয়ে রাখতে পেরেছেন, তাঁদের কাজের চাপ বেড়েছে অনেকটাই।
তার চেয়েও বড়ো সমস্যা হচ্ছে , বাড়িতে থাকাটাও ক্রমেই বড়ো ঝঞ্ঝাটের হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বড়োরা ঘরে আটকে থেকে তিরিক্ষে হয়ে আছেন, খুদেগুলোও স্কুলে যেতে না পেরে, বন্ধুদের দেখা পেরে বেজায় বিরক্ত। ঘরে-বাইরে এইরকম টেনশনে মাথা ঠিক রাখা দায়।
কিন্তু মানসিক শান্তি বজায় না রাখতে পারলে তো আপনি ভেঙে পড়বেন! কোভিডের সঙ্গে লড়াইয়ের অন্যতম হাতিয়ার হচ্ছে মনের জোর – তা না থাকলে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না যে! তাই যত কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়েই যেতে হোক না কেন, কয়েকটি টিপস মেনে চলুন অবশ্যই।
. কঠিন সময়ের সঙ্গে যুঝতে পারে সুস্থ শরীর। তাই সঠিক ডায়েট মেনে চলা একান্ত জরুরি। বেশি তেলমশলা খাবেন না, বাইরের খাবার থেকে দূরে থাকুন। শরীর ঠান্ডা রাখার নানা উপায় খুঁজে বের করুন। শসা, তরমুজের মতো ফল, মৌরি-মিছরির শরবত, বেলের পানা, আমপোড়া শরবত ইত্যাদি খাওয়া দরকার। তুলসীর বীজ জলে ডুবিয়ে খেলেও খুব ভালো ফল পাবেন।
. খানিক সময় বরাদ্দ রাখুন হাঁটার জন্য। বাড়ির ছাদে বা লনে হাঁটতে পারেন – ভোর, বিকেল, রাত – সুবিধেমতো যে কোনও সময়ে হাঁটলেই চলবে। বাড়ির সকলের জন্যেই এই রুটিন বরাদ্দ থাক। খানিকক্ষণ হাঁটাচলা করলে শরীরের পাশাপাশি মন ভালো থাকে। মেডিটেট করতে পারলে তো খুবই ভালো হয়।
. যে যার মতো মোবাইলে মুখ গুঁজে পড়ে থাকবেন না। বিশেষ করে শিশু বা কিশোর-কিশোরীদের স্ক্রিন অ্যাডিকশন বাড়ছে। এর ফলে লেখাপড়া ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তাদের বিকাশ বাধাপ্রাপ্ত হবে। পরিবারের সবাই একসঙ্গে সময় কাটান, কথা বলুন। একে অপরের অভাব-অভিযোগ শুনুন। তাতে ঝগড়া হতে পারে, কিন্তু মন ভালো থাকবে।
. এর আগেও পৃথিবীতে বহু মহামারী এসেছে, মানবসভ্যতা কিন্তু ধ্বংস হয়নি। এই সময়টাও কেটে যাবে, কিন্তু কঠিন দিনগুলোয় যা শিখলেন তা মনে রাখুন। কখনও নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে হেলাফেলা করবেন না। মাস্ক পরুন নিয়ম করে। ডাক্তারের নির্দেশিকা মেনে চলুন। মাস্ক ঠিকমতো ব্যবহার করলে আর কোভিড বিধি মানলে বিপদের আশঙ্কা কমবে।
. বিভ্রান্ত হবেন না। সোশাল মিডিয়ায় দেখতে পাবেন, এই কঠিন সময়ে মানুষ কীভাবে অন্যজনের পাশে দাঁড়াচ্ছে। ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে গিয়ে অক্সিজেন, রোগীর খাবার, দুষ্প্রাপ্য ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছে – সবাইকে সাহায্য হয়তো তারা করতে পারবে না কোনওদিনই, তার জন্য বিস্তর ট্রোলিংও হচ্ছে। কিন্তু তার পরেও মানুষ হেরে যাচ্ছে না, পরদিন আরও একটা দল গজিয়ে উঠছে। এটাও তো আশা জাগায়, তাই না?