কোভিডের বাড়াবাড়িতে পুরোনো বিপদকে ভুলে যাননি তো? ডেঙ্গি কিন্তু দোরগোড়ায় ওত পেতে আছে, একটু অসাবধান হলেই জাঁকিয়ে বসবে! ডেঙ্গি আর কোভিডের লক্ষণগুলিও অনেকাংশেই মিলে যায়, তাই রোগ নির্ণয়ে দেরি হলে কিন্তু বিপদ বাড়বে বই কমবে না!
ডেঙ্গি থেকে বাঁচার একেবারে প্রথম পদক্ষেপ হল বাড়িটাকে দুর্গের মতো সুরক্ষার চাদরে মুড়ে ফেলা। মশা ঠেকানোর উপায়গুলো ঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারলে আপনি ম্যালেরিয়ার হাত থেকেও সুরক্ষা পাবেন। তাই আর দেরি না করে লেগে পড়ুন আজ থেকেই!
. বাড়ির আশে-পাশে কোথাও জল জমে থাকতে দেবেন না। সেজন্য খুব সতর্ক থাকতে হবে। এই লকডাউনে মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য অনেকেই গাছ লাগিয়েছেন বাড়িতে, ছাদে, বারান্দায়। কোনও ভাঙা টব, ছোটো খুরি, মাটির ভাঁড়, ডাবের খোলায় জল জমে থাকছে না তো? সব সময়ে কড়া নজর রাখুন, কোথাও ময়লা জমে থাকতে দেবেন না।
. ডেঙ্গি মশার লার্ভা কিন্তু বহুদিন সুপ্ত অবস্থায় থাকে, বর্ষার জমা জল পেলেই আবার জেগে উঠবে। জলের ওভারহেড আর আন্ডারগ্রাউন্ড ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করান। যাঁরা ছাদে অ্যাকুয়ারিয়াম রাখেন বা পদ্ম/ শালুকের মতো গাছ লাগিয়েছেন, তাঁরা অবশ্যই গাপ্পি মাছ ছাড়ুন জলে। এই খুদে মাছগুলি মহানন্দে মশার লার্ভা খেয়ে নেবে।
. ঘরে মশা ঢুকতে দেওয়া যাবে না। যাঁদের বাড়ির আশে-পাশে কোথাও নির্মীয়মান ফ্ল্যাট আছে, তাঁরা অবশ্যই ঘরের জানলায় মশারোধী নেট লাগান, বা রেপেলেন্ট জ্বালান। সেই সঙ্গে জানলার পর্দায় সিট্রোনেলা তেল লাগিয়ে রাখুন। তার গন্ধে মশা ঘরে ঢুকবে না। জানলায় সিট্রোনেলা গাছও লাগাতে পারেন। রাতে মশারি খাটান, বিশেষ করে যদি বাড়িতে বাচ্চা থাকে।
. পুরো হাতা জামা পরুন। বিশেষ করে যাঁরা ভোরে বা বিকেলের দিকে পার্কে হাঁটতে যান, তাঁদের শরীর ঢাকা পোশাক পরা জরুরি। ডেঙ্গির মশা দিনের আলোতে কামড়ায়, ম্যালেরিয়ার মশা শিকারে বেরোয় রাতে। ছোটো বাচ্চা বা বয়স্কদের ক্ষেত্রেও এই নিয়ম মানা উচিত।
. রাতে হয় জানলা বন্ধ করে এসি চালান, না হলে মশারির মধ্যে শোওয়া প্র্যাকটিস করুন। এর চেয়ে ভালো সুরক্ষা আর কিছুতেই মিলবে না।
. মশার ধূপ বা রেপেলেন্ট জ্বালালে কিন্তু অনেক বাচ্চা বা সিওপিডি আক্রান্তের শ্বাসকষ্ট হয়। তার চেয়ে মশা নিরোধক প্যাচ বা স্টিকার লাগান জামায়। ঘর মোছার সময়ে কোনও ভালো ফিনাইল ব্যবহার করলেও কাজে দেবে। সকাল-সন্ধে ধুনো দিলেও কাজে দেবে।
. খুব চড়া পারফিউম, ঘামের গন্ধ আর অন্ধকার মশাকে আকৃষ্ট করে। এগুলি এড়িয়ে চলতে পারলেও ভালো হয়।
জ্বর এলে কিন্তু দেরি করবেন না, ডাক্তারের পরামর্শ নিন। তিনি যা বলবেন, তা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতে হবে। একেবারেই নিজের মতে ডাক্তারি ফলাবেন না, ডেঙ্গি আক্রান্তের প্লেটলেট কমে খুব দ্রুত। পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে সামান্য গাফিলতিতেই।