গত বছর ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজ়েশনের এক সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছিল যে, সারা পৃথিবীতে অন্তত 10 লক্ষ তরুণ–তরুণীর শ্রবণযন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হতে চলেছে দিনভর কানে ইয়ারফোন গুঁজে বা হেডফোন লাগিয়ে রাখার ফলে। আশপাশের সমস্ত শব্দ ঢেকে ফেলার জন্য এঁরা কানে সারাদিন ইয়ারফোন গুঁজে রাখেন এবং চড়া স্বরে গান শোনেন। এখনকার পরিস্থিতি যে আরও অনেক বেশি জটিল।
কানে সারাক্ষণ ইয়ারফোন গুঁজে রাখাটা এখন আমাদের জীবনের অঙ্গ হয়ে গিয়েছে, চাইলেও আমরা তার থেকে পালাতে পারব না। বাচ্চার অনলাইন ক্লাস, অভিভাবকের প্রেজেন্টেশন, বয়স্কদের ভিডিও কল – সব কিছুই চলছে ইয়ারপ্লাগ বা হেডফোনের ভরসায়।
দিনে ৯০ মিনিটের বেশি কানের মধ্যে চড়া শব্দতরঙ্গ খেলে বেড়ালেই শ্রবণশক্তি হারানোর আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। খুব চড়া শব্দ না হলেও, একটি বাচ্চা বা কিশোর তো অনলাইন ক্লাস আর টিউশন মিলিয়েই দিনের মধ্যে অন্তত ৪-৫ ঘণ্টা হয় হেডফোন বা ইয়ারফোনের শরণ নিতে বাধ্য হচ্ছে! তার পর আছে গেম খেলা বা চড়া স্বরে গান শোনা। এর ফল এখনই টের পাওয়া না গেলেও কিছু বছর পর মারাত্মক বিপদ হতে পারে। তাই আজ থেকেই সাবধান হোন।
হেডফোন শেয়ার করলে বাড়ে কানে ইনফেকশনের আশঙ্কা: আপনি কি অন্য কারও ইয়ারবাড ব্যবহার করবেন কানের ময়লা পরিষ্কারের জন্য? উত্তর যদি না হয়, তা হলে অন্যের ইয়ারফোনও ব্যবহার করা উচিত নয়। আর এই করোনা পরিস্থিতিতে তো একেবারেই নয়। বন্ধুবান্ধব, প্রেমিক-প্রেমিকা বা পরিবারের মধ্যেও হেডফোন বা ইয়ারফোন শেয়ার করবেন না। তার ফলে নানা ইনফেকশন হতে পারে কানে।
প্রতি এক ঘণ্টা অন্তর হেডফোন খুলে রাখুন কান থেকে: কাজ বা বিনোদন, যে কোনও কারণেই হোক না কেন, সারাদিন হেডফোন পরে থাকবেন না। প্রতি এক ঘণ্টা অন্তর তা খুলে রাখুন। যদি দেখেন যে এত লম্বা সময় কানের মধ্যে তা গুঁজে রাখার কারণে কান ভোঁ-ভোঁ করছে, তা হলে তৎক্ষণাৎ ডাক্তারের দ্বারস্থ হোন। শ্রবণশক্তি হারানোর প্রথম লক্ষণ এটাই।
রাস্তাঘাটে ইয়ারফোন পরে যাবেন না: নয়েজ় ক্যানসেলিং ইয়ারফোন বা হেডফোন লাগিয়ে রাস্তায় চলাফেরা করার অভ্যেসটাও মারাত্মক। গাড়িঘোড়ার আওয়াজ শুনতে না পেয়ে সাঙ্ঘাতিক দুর্ঘটনাও ঘটছে প্রায় প্রতিদিনই।
কাজের সময় গানের দ্বারস্থ না হওয়াই ভালো: পড়াশোনা বা কাজকর্ম করার সময় গান শোনার অভ্যেস থাকলে তা বদলান, এতে নিশ্চিতভাবেই আপনার ফোকাস নড়ে যাওয়ার কথা। কানকে খানিক বিরতি দেওয়াও দরকারি।
সিনেমা দেখার সময়েও ইয়ারফোন পরেন? চেষ্টা করুন সাউন্ডবক্সের সাহায্যে আওয়াজ বাড়িয়ে নেওয়ার। সারাদিন কাজের পর আবার বিনোদনের সময়েও হেডফোন পরতে হলে সত্যিই সমস্যা বাড়বে।