আমাদের রোজের জীবনে কায়িক পরিশ্রমের গুরুত্ব যত কমছে, তত বাড়ছে নানা লাইফস্টাইল ডিজিজের প্রাদুর্ভাব। তার মধ্যে একেবারে প্রথমেই আসবে বাড়তি কোলেস্টেরলের সমস্যা। অনেকেই কোলেস্টেরলকে শত্রু ভাবেন, কিন্তু আমাদের কোষের মেমব্রেন তৈরি ও তার রোজের কাজকর্ম সুষ্ঠুভাবে করার ক্ষেত্রে কোলেস্টেরলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।
যাঁরা শারীরিকভাবে অ্যাকটিভ ও ফিট, তাঁদের শরীরে বাড়তি কোলেস্টেরল জমে না, সেডেন্টারি জীবন কাটালেই তা মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সুখবর হচ্ছে, পাঁচটি অতি সহজ উপায় আছে কোলেস্টেরল কমানোর এবং কোনওটি পালন করাই খুব একটা কঠিন নয়।
ওজন কমাতেই হবে
বাড়তি ওজনের ভারমুক্ত হওয়াটা আপনার সবচেয়ে জরুরি লক্ষ্য হওয়া উচিত। কোলা জাতীয় পানীয় থেকে দূরে থাকুন। মদ্যপান একেবারে কমিয়ে দিন। খাবার থেকে ছেঁটে ফেলুন বাড়তি চিনি। বেশি করে সবজি খান। এর কোনওটাই ‘কাল করব’ বলে ফেলে রাখবেন না, প্রতিটি দিনের পরিশ্রম সুস্থতার জন্য একান্ত প্রয়োজনীয়।
ব্যায়াম করুন, স্ট্রেসমুক্ত থাকুন
ব্যায়াম যাঁরা করেন না, তাঁরা তার গুরুত্বটাও বোঝেন না। নিয়মিত এক্সারসাইজ করলে শরীর থেকে হ্যাপি হরমোন সেরোটনিন নিঃসৃত হয়। তার ফলে কমে যায় স্ট্রেস। স্ট্রেস বাড়লেই কিন্তু আপনার রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রাও বাড়বে।
মদ্যপান ও ধূমপানে রাশ টানতে হবে
এটিও বাধ্যতামূলক। রক্তে বাড়তি কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকা সত্ত্বেও কোনও নেশা করা আর আত্মহত্যা করা একই ব্যাপার। খুব অল্প পরিমাণ ওয়াইন পান করতে পারেন একান্ত কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানে, তা ছাড়া মদ্যপান চলবে না একেবারেই।
ট্রান্স ফ্যাট বাদ দিন ডায়েট থেকে
ভাজাভুজি, ফাস্ট ফুড, দোকান থেকে কেনা ভাজা মিষ্টি, প্যাকেটজাত খাবারে ট্রান্স ফ্যাট থাকে প্রচুর, তা আপনার একেবারেই চলবে না। বেশি করে শাকসবজি খান। বাড়িতে তৈরি স্যুপ, স্যালাড খেতে পারেন রোজ। বাড়িতে রান্না করা খাবার খেতে হবে, তাতে বেশি তেল দেওয়া চলবে না। সবজা বা তুকমলঙ্গা (তুলসীর বীজ) ভিজিয়ে রাখুন জলে, তার পর তা খেয়ে ফেলুন – এই জিনিসটি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে খুব কাজে দেয়। ওটস খান, খেতে পারেন দালিয়া। চলবে না ফুল ফ্যাট দুধ, চর্বিযুক্ত মাংস, আপেল। এর সলিউবল ফাইবার কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে।
ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড খাওয়া বাড়ান
মাছ, বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ, বাদাম আর ফ্ল্যাক্সসিড রাখুন খাদ্যতালিকায়। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের প্রভাবে কোলেস্টেরল কমে। তবে সব চাইতে জরুরি হচ্ছে ডায়েটিশিয়ান আর ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলা। কোলেস্টেরল কমাতে হলে নির্দিষ্ট ডায়েট চার্ট মানতেই হবে, তাতে কাজ না হলে খেতে হবে ওষুধ।