বাড়িতে থেকে কাজ করতে গিয়ে আর কিছু হোক না হোক, কোমরে-পিঠে যন্ত্রণাটা অনেক বেড়ে গিয়েছে, তাই না? আর সেটার জন্য আপনার বসার ভঙ্গিই সম্ভবত দায়ী। বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে, আরামকেদারায় এলিয়ে বসে ল্যাপটপে ঘাড় গুঁজে থাকলে কোমরে, পিঠে, কনুইতে ব্যথা হওয়া স্বাভাবিক।
এই অবস্থায় আপনাকে নিজের জন্য একটা ওয়ার্ক স্টেশন গড়ে তুলতে হবে সবার আগে। একটা ছোটো টেবিল, একটা চেয়ার রাখা মাস্ট। টানা বিছানায় বা মেঝেতে বসে কাজ করলে সমস্যা হতে পারে। তবে একান্ত উপায় না থাকলে চেষ্টা করুন বসা অবস্থা থেকে মাঝে মাঝে উঠে একটু হাঁটা-চলা করে নেওয়ার।
বিছানার উপর ল্যাপটপ রেখে ঘাড় গুঁজে বসে থাকবেন না। পশ্চারের কারণে আপনার ঘাড়ে ব্যথা হবে, পিঠ ঝুঁকিয়ে, কুঁজো হয়ে বসলে পিঠে বা কোমরেও ব্যথা হতে পারে। লেখার সময় হাত সারাক্ষণ ঝুলিয়ে রাখলে কনুইতে একদিন যন্ত্রণা শুরু হয়ে যাওয়াটাও বিচিত্র নয়। একটা টুল বা ডেস্ক অতি অবশ্যই দরকার – ল্যাপটপ শক্ত সারফেসে না রাখলে তার স্বাস্থ্য খারাপ হবে।
এমনভাবে ল্যাপটপ রাখুন যাতে বেশিক্ষণ ঘাড় ঝুঁকিয়ে রাখতে না হয়। একটা রাইজার বা অ্যাঙ্গেলড স্ল্যাপ কিনে তার উপর মেশিন বসানো যায়। একটু উঁচু একটা ফোল্ডিং ডেস্ক কিনতে পারেন – তার উপর কয়েকটা মোটা বই বা কাঠের বাক্স রেখে ল্যাপটপ রাখুন। স্ক্রিন তা হলে চোখের প্রায় সমান্তরালে এসে যাবে।
এই ধরনের ডেস্কের দাম মোটেও খুব বেশি নয় — অনলাইনে প্রচুর ভ্যারাইটি পাবেন। আপনার ডেস্ক/ টুলের ধার থেকে অন্তত ৬ ইঞ্চি ছেড়ে রেখে ল্যাপটপ বা ডেস্কটপের কি প্যাড রাখুন। তাতে আপনার হাত যথেষ্ট স্পেস পাবে, কনুই ঝুলে থাকবে না বাইরে।
. মাঝে মাঝেই আপনাকে ঘাড়ের স্ট্রেচিং করতে হবে। ঘাড় চারপাশে ঘোরান, উপর-নিচে মুভ করুন। একই কথা খাটবে দুই কাঁধের ক্ষেত্রেও। আপনাকে নিয়মিত দুই হাত কাঁধের কাছে ভাঁজ করে নিয়ে ঘোরাতে হবে – তাতে কাঁধের জয়েন্ট ভালো থাকবে।
. সারাক্ষণ কম্পিউটার বা ল্যাপটপের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকবেন না। বাড়িতে কিছু গাছ রাখার ব্যবস্থা করুন। ঘণ্টা খানেক পর পর গাছের সবুজের দিকে তাকান। সিট ছেড়ে উঠুন, জলের বোতল ভরে নিয়ে আসুন বা এক কাপ চা বানান। সারাদিন বসে থাকাটা কাজের কথা নয়।
. পিঠ সিধে, টান টান রেখে বসুন। মাথা থাকবে সোজা, আই লেভেলে রাখুন মনিটর। তা না হলেই বাড়বে স্পন্ডিলাইটিস ও অন্য নানা সমস্যা।