মাঝে মাঝেই এমন অনেক ডায়েট প্ল্যান বাজারে আসে, যা মানলে রাতারাতি আপনার ওজন কমতে আরম্ভ করবে – এমনটাই দাবি করা হয়। অনেকে হুড়মুড়িয়ে তা অনুসরণ করতে আরম্ভ করেন আশায় ভর করে। কিন্তু কার্যত তা কতটা কাজের, তা নিয়ে সব সময়েই সন্দেহ থাকে।
তারও আগে জানা দরকার, আপনি ওজন কমাতে চাইছেন কেন? সামনে বিয়েবাড়ি আছে? নাকি ওজন বাড়ার কারণে ভারসাম্য হারিয়েছে হরমোন – তাই ডাক্তারের কথামতো চটজলদি কোনও রাস্তা খুঁজছেন? কোনও ক্ষেত্রেই কিন্তু হুট করে ওজন কমানোর কোনও চেষ্টা করতে যাবেন না, তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
তবে এ বিষয়ে বিশদ আলোচনার আগে জেনে নেওয়া যাক জিএম ডায়েট কাকে বলে? জেনারেল মোটরস কোম্পানি তাদের কর্মীদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই ডায়েট প্ল্যান চালু করেছিল। এই ডায়েটে সপ্তাহে সাতদিন সাতটি ভিন্ন ফুড গ্রুপের উপর ভরসা রাখতে হবে আপনাকে। সোমবার সারাদিন হয়তো ফল খেলেন কেবল, মঙ্গলবার খাবেন সবজি, বুধবার বাদাম আর স্যালাড ছাড়া কিছু খাবেন না, বৃহস্পতিতে হয়তো মাছ খেয়েই থাকতে হবে!
তবে এটা আমরা সহজ করে বললাম, ঠিক কীভাবে এই ডায়েট প্ল্যান মানতে হবে তার নিয়ম আছে। সকেল-বিকেল-রাতে কখন কী খেতে পারবেন তা পরিষ্কার বলা থাকে। বুঝতেই পারছেন, নিজের চেনা রুটিন থেকে আচমকা সরে গেলে শরীর বেশ অবাক হয়ে যায় – ফলে কিছুটা ওজন তো কমেই! কিন্তু এই প্ল্যান চালিয়ে যাওয়া খুব মুশকিলের – আর একটু সরলেই আপনার হারানো ওজন ফের ফিরে আসতে সময় নেবে না!
তার চেয়েও বড়ো কথা, মানুষ সভ্যতার আদিকাল থেকে সুষম পুষ্টিকর খাবারই খেয়ে এসেছে। তার মধ্যে এনার্জির জন্য কার্বোহাইড্রেট, শক্তির জন্য প্রোটিন, স্বাদ আর ভিতরের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য ফ্যাট, কিছু ভিটামিন-মিনারেল রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। নদীমাতৃক দেশের মানুষ মাছ খেয়েছে, ঊষর মরুভূমিতে চলে মাংস আর দুধ, যেখানে ফল আর শাকসবজি বেশি সেখানে নিরামিষ খাবারের প্রাধান্য – এই নিয়মটা কাজেও দেয়, মানাও সহজ।
কেবল ফল খেয়ে থাকলে আপনার সুগার বাড়তে পারে, মাসল দুর্বল হয়ে পড়তে পারে, মাথা ঘোরার সমস্যা হওয়াও বিচিত্র নয়। তার চাইতে নিয়ম মেনে খাওয়াদাওয়া করুন, সঙ্গে রোজ খানিকটা ব্যায়াম করা জরুরি। আর সেলেব্রিটিরা কী করছেন, তা ভেবে মাথা খারাপ করবেন না। ওঁদের কাজের সূত্রেই আন্ডারওয়েট থাকতে হয়, না হলে ক্যামেরার সামনে দেখতে খারাপ লাগে। তাই ওঁরা সারাদিন কী খেয়ে থাকেন, তা ভেবে মাথা খারাপ করবেন না। সুস্থ থাকতে নিজের মতো একটা রেজিম বানিয়ে নিন। দরকারে পুষ্টিবিদের সাহায্য নিতে হবে।