অনেকেই মনে করেন, পৃথিবীতে অলিভ অয়েলের চেয়ে ভালো তেল আর নেই। তাই দাম বেশি হলেও তা দিয়ে রান্না করলে স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। কিন্তু ভারতীয় রান্নার স্বাদ অলিভ অয়েলে খুলবে কিনা, তা না ভেবেই রোজের ব্যবহারে তা বরাদ্দ করার কোনও কারণ আছে কি?
হ্যাঁ, এ কথা ঠিক যে অলিভ অয়েলে সহজ ভাষায় যাকে বলে ‘ভালো ফ্যাট’ তার মাত্রা বেশি, তা হার্ট সুস্থ রাখে। খাঁটি অলিভ অয়েল ত্বক বা চুলে মাখতেও পছন্দ করেন অনেকে।
কিন্তু সত্যিই কি মহার্ঘ অলিভ অয়েল খাওয়া সবার জন্য জরুরি?
সব সময় মনে রাখবেন, আপনি যেখানে থাকেন, সেখানকার স্থানীয় খাবারই আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো, তেলের ক্ষেত্রেও হিসেবটা আলাদা হওয়ার কোনও কারণ নেই। সরষের তেল বা খাঁটি নারকেল তেল থেকেও আপনি একই উপকার পাবেন। প্রত্যেকটিই আপনার ত্বক আর চুল ভালো রাখতে একইরকম কার্যকর হবে। তবে কারও বিশেষ পক্ষপাত থাকলে তিনি অলিভ অয়েল ব্যবহার করতেই পারেন স্নানের সময়ে, কোনও সমস্যা নেই। বরং এর ভিটামিন ই ত্বক-চুলের খেয়াল রাখবে।
অলিভ অয়েল দিয়ে রোজের সব রান্না করার দরকার সেই অর্থে নেই, বিশেষ করে যদি আপনার বাড়িতে ভারতীয় রান্নাই হয়। অলিভ অয়েল মূলত ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল ও মধ্যপ্রাচ্যের রান্নায় ব্যবহার করা হয়। গ্রিস, ইতালি, তুরস্কে সব রান্নাই রাঁধা হয় এই তেলে। আজকাল অনেকেই বাড়িতে বিদেশি রান্না করেন, তাঁরা এই তেল ব্যবহার করুন। বিশেষ বিশেষ রান্নার স্বাদ খোলতাই হয় বিশেষ তেলেই — সেটা মাথায় রাখতে হবে।
এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল রান্নায় ব্যবহার করা যায় কিনা তা নিয়ে নানা মত আছে। এই তেলের স্মোকিং পয়েন্ট কম, তাই ছাঁকা তেলে ভাজাভুজি এড়িয়ে গেলেই ভালো হয়। স্যালাডে দিন, ড্রেসিং হিসেবেও খুব কাজের – কাঁচা অবস্থাতেই এর ফ্লেভার সবচেয়ে ভালো থাকে।
রান্না করলে অলিভ অয়েলের অ্যান্টি অক্সিডান্টের মাত্রা খানিক কমে যায়। সেই সঙ্গে বেশি আঁচে এর ফ্লেভারও খানিকটা নষ্ট হয়। আর একটা কথা, অনেকেই মনে করেন যে অলিভ অয়েল আর ওয়াইন পুরোনো হলেও তার স্বাদ-গন্ধ নষ্ট হয় না একটুও। তাঁরা ভুল ভাবেন।
বেশিদিন ফেলে রাখলে অলিভ অয়েলের ফ্লেভার নষ্ট হয়ে যায়। বাজে গন্ধ বেরোয়। তাই অতি যত্নে বাঁচিয়ে বাঁচিয়ে রাখতে হবে না – প্যাকেটের গায়ে লেখা এক্সপায়ারি ডেটের মধ্যেই শেষ করে ফেলুন।