বয়স যাই হোক না কেন, আমাদের সকলের জীবনেই গ্যাজেটের প্রভাব বেড়েছে। একেবারে খুদে শিশুকে স্কুলের ক্লাস করতে হয়, সঙ্গে আছে নানা অ্যাক্টিভিটি, ভিডিয়ো গেম। বড়োদের অফিস, মিটিং, ডেডলাইন সামলানোর পর একটু ওয়েব সিরিজের চাটনি। তাই আশঙ্কাও বাড়ছে – এত গ্যাজেট এক্সপোজার হলে রেটিনার কোনও ক্ষতি হবে না তো?
এমনিতে খুব বেশিক্ষণ মোবাইল বা ল্যাপটপ ব্যবহার করলে ড্রাই আইয়ের সমস্যা হতে পারে – অনেকক্ষণ স্থির দৃষ্টিতে গ্যাজেটের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখের তরলের ভারসাম্য হারায়। তাই বলা হয় টানা এক ভাবে কাজ না করে মাঝে মাঝে বিরতি নেওয়া উচিত। স্ক্রিনের দিক থেকে দৃষ্টি সরিয়ে অন্যদিকে তাকাতে হয় খানিক সময় অন্তর।
কিন্তু গ্যাজেট থেকে যে নীল আলো বা ব্লু লাইট বিচ্ছুরিত হয়, তা কি কোনওভাবে রেটিনার ক্ষতি করে? বিদেশে ব্লু লাইট গ্লাস পরাটা দস্তুর হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেলেব্রিটিটা পরছেন, অভিনেত্রী ড্রু ব্যারিমোর তো বিক্রিও করছেন! বলা হচ্ছে, এই বিশেষ চশমা ডিজিটাল ডিভাইস থেকে বিচ্ছুরিত আলো এবং সূর্য রশ্মির ক্ষতিকারক প্রভাব কাটিয়ে দেয়, চোখ স্নিগ্ধ রাখে।
এবার প্রশ্ন, ব্লু লাইট কি সত্যিই চোখের ক্ষতি করে? সবার কি ব্লু লাইট গ্লাস পরা উচিত? এ কথা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই যে অতিরিক্ত গ্যাজেটের ব্যবহার কারও পক্ষেই ভালো হতে পারে না। বিশেষ করে দিনের পর দিন রাত জেগে যদি আপনি ওয়েব সিরিজ দ্যাখেন বা ভিডিয়ো কল করেন, তা হলে মেলাটোনিন নামক হরমোনের উৎপাদন ব্যাহত হবে।
ফলে আপনার ঘুম আসতে দেরি হবে, রাতের বেলায় ত্বক নিজেকে রিপেয়ার করে – বাধাপ্রাপ্ত হবে সেই কাজটিও। দীর্ঘদিন পর্যাপ্ত ঘুম না হলে চোখের কোলে কালি পড়বে, ত্বক নিষ্প্রাণ হয়ে আসবে। নানা শারীরিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
গ্যাজেটের ব্যবহার অনিয়ন্ত্রিত হলে চোখের ক্ষতি হবে – এ কথা একশো শতাংশ ঠিক। কিন্তু তার জন্য নির্দিষ্টভাবে ব্লু লাইট দায়ী – এ কথা এখনই বলা মুশকিল। তার জন্য আরও গবেষণা করা প্রয়োজন। বিশেষ করে বাচ্চাদের বেশিক্ষণ ভিডিয়ো গেম নিয়ে বসে থাকতে দেবেন না – তাকে বিকেলবেলা পাড়ার পার্কে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন – একটু ছোটাছুটি করলে শরীর ভালো থাকবে।
তবে দিনের বেলা আপনার ঝিমুনি আসতে দেয় না এই ব্লু লাইট – সেটা জানেন? তা মনঃসংযোগ বাড়াতেও সাহায্য করে খুব। নির্মাতারা বলেন, ডিভাইসের ব্লু লাইটের ব্রাইটনেস একটু কমিয়ে রাখলে খুব সুবিধে হয়… তা চোখের পক্ষে আরামদায়ক হয়ে ওঠে। তেমনটাও করে দেখতে পারেন।