এত বড়ো একটা ভুঁড়ি থাক, কেউই তা চায় না! কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, শরিরে বাড়তি ফ্যাট জমা হতে আরম্ভ করলে প্রথমে পেটের আশপাশটাকেই টার্গেট করে। কোনও পোশাকেই দেখতে ভালো লাগে না, ওবিস প্রমাণিত হলে তো আর রক্ষে নেই – ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যার মতো হাজারো অসুখ, আর সেই সঙ্গে খাওয়াদাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা। তাই পেটের ফ্যাট কমানো খুব জরুরি।
তবে প্রথমেই মনে রাখবেন, রাতারাতি ঘুম থেকে উঠেই যেমন কারও ভুঁড়ি গজায় না, তেমনই তা চট করে যেতেও চাইবে না। আপনাকে রীতিমতো কসরত করতে হবে, খাওয়াদাওয়ায় রাশ টেনে সর্বাঙ্গীণ পরিবর্তন আনতে হবে জীবনে – তবেই ফল মিলবে। তাই ট্রাউজার্সের মাপ বাড়তে আরম্ভ করলেই সতর্ক হোন।
আর একটা কথা, সারাদিন ধরে কয়েকশো ক্রাঞ্চেস বা টুইস্ট করলেই কিন্তু আপনার পেট পাতলা হবে না। তার জন্য অনেকদিন ধরে লাগাতার পরিশ্রম করতে হবে। গোটা শরীর থেকে ফ্যাট কমাতে হবে, তাতেই ধীরে ধীরে কমে যাবে পেটের চারপাশে জমে ওঠা মেদও।
আপনার ডায়েটে যেন প্রচুর সলিউবল ফাইবার থাকে, তা দেখবেন
শাকপাতা, হোল গ্রেন (অর্থাৎ ভুষিসুদ্ধ আটার রুটি, লাল চালের ভাত, স্টিল কাট ওটস, বাজরা ইত্যাদি), গোটা ফল আপনার পেট ভরিয়ে দেয় খুব তাড়াতাড়ি, তা হজম করতে প্রচুর ক্যালোরিও খরচ হয়। রোজের রান্নায় বেশি তেল-মশলা দেবেন না, সাঁতলে বা সেদ্ধ করে খাওয়ার অভ্যেস তৈরি করুন।
প্যাকেটজাত খাবার খাওয়া কমান
প্যাকেটবন্দি কেক বা বিস্কিট তো চলবেই না, বাদ দিন স্যান্ডউইচ স্প্রেড, মার্জারিন, মাখনজাতীয় সব কিছু। মাঝে মধ্যে অল্প দেশি-ঘি চলতে পারে। বাকি সব কিছু থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে। ট্রান্স ফ্যাট চলবে না, বেশি চিনি বা গুড় খাওয়া থেকেও বিরত থাকতে হবে। বিশেষ করে যদি আপনার বয়স ৪০-এর উপরে হয়, তা হলে তো মদ্যপানও কমাতে হবে।
রোজ ব্যায়াম করতে হবে
ব্যায়ামের রুটিনে ছাড় দিলে একেবারেই চলবে না। কার্ডিও আর লাইট ওয়েট ট্রেনিং দুটোই দরকার। যাঁদের ওজন বেশি, ওবেসিটির সমস্যা আছে, তাঁদের আমরা প্রশিক্ষিত ট্রেনারের সাহায্য নিয়ে তবেই ব্যায়াম করার পরামর্শ দেবো – তা না হলে চোট-আঘাত পাওয়ার আশঙ্কা থাকে। রোজ এক এক্সারসাইজ চলবে না, প্রতিদিন রুটিনে বদল আনতে হবে। হাঁটুন, জগিং করুন। স্কিপিং করতে পারেন – সেটাও খুব ভালো কার্ডিও। ব্যাডমিন্টন বা ফুটবল খেলতে পারলে তো কথাই নেই!
রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কমান, বেশি করে প্রোটিন খান
ময়দার লুচি, আলুর দমের বদলে আপনাকে আস্থা রাখতে হবে ডিম সেদ্ধ বা সবজি দেওয়া ডালের উপর। প্রোটিন বেশি খেলে পেট ভরে থাকবে বেশিক্ষণ। তবে কার্বোহাইড্রেট একেবারে বাদ দিয়ে দিলে আবার এনার্জি পাবেন না। রেড মিট নয়, আপনার খাদ্যতালিকায় রাখুন চিকেন বা মাছ।
স্ট্রেস কমান
স্ট্রেস কমাতে বলা যত সহজ, কাজটা ততটাই কঠিন। কিন্তু স্ট্রেসের প্রভাবে শরীর বাড়তি কর্টিসল হরমোন রিলিজ করবে, তার ফলে আপনার কোমরের মাপ বাড়তেই থাকবে। তাই মন ভালো রাখার চেষ্টা শুরু করুন সবার আগে। ব্যায়াম করলে অবশ্য মন ভালো থাকে।