পৃথিবীটা একদিকে যেমন ছোট হয়ে গেছে, তেমনি কোথাও কোথাও লক্ষ যোজন ফাঁকও রয়েছে! যেমন ধরুন, পছন্দের মানুষটির সঙ্গে এক কাপ কফি খেতে ইচ্ছে হলেও অনেককে ছুটতে হয় ভিসার অফিসে বা লাইন দিতে হয় প্লেন বা ট্রেনের টিকিটের জন্য! লং ডিসট্যান্স সম্পর্কের সবচেয়ে বড় সমস্যা বোধহয় এটাই!
আজকাল কাজ বা লেখাপড়ার সূত্রে অনেক প্রেমিক প্রেমিকাকেই থাকতে হয় দুটি আলাদা শহরে। অনলাইন যোগাযোগ ব্যবস্থা আর সোশাল মিডিয়ার সৌজন্যে অনেক সময় আলাপ হয়ে যায় ভিনদেশি পুরুষ বা মহিলার সঙ্গে। আলাপ ক্রমশ ভালো লাগায় গড়াতেও সময় লাগে না বিশেষ! আর তার পরেই লাভস্টোরিতে টুইস্ট, এন্টার ভিলেন ওরফে দূরত্ব! একই দেশের দুই রাজ্যে থাকলে যাও বা একটু সুবিধে, দু’জনে দুটো আলাদা দেশের নাগরিক হলে তো কথাই নেই! সম্পর্কের মধ্যে সারাক্ষণই দীর্ঘ দূরত্ব আর তার মানেই নানা অনিশ্চয়তা, নানা দুশ্চিন্তার আনাগোনা। সম্পর্কের গতিপ্রকৃতি, ভবিষ্যৎ নিয়েও নানা প্রশ্ন। কীভাবে সামলাবেন সম্পর্কের মাঝে এই দীর্ঘ দূরত্ব?
এ প্রশ্নের উত্তরে প্রথমেই যেটা করতে হবে, সেটা হল নিজের মনের ওপরে নিয়ন্ত্রণ রাখা। প্রেমিক বা প্রেমিকা দূরে থাকলে সামান্য কারণেই মনে অস্থিরতা আসা, নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হওয়া স্বাভাবিক। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ সব আশঙ্কার কোনও ভিত্তি নেই। সারাক্ষণ নিজের টেনশন অপরজনের ওপরে চালান করবেন না, বরং নিজের মনকে যুক্তি দিয়ে বোঝান। আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে পারলে বাকি লড়াইটা আপনার সহজ হয়ে যাবে।
মেসেজের উত্তর সঙ্গে সঙ্গে না পেলে ভেঙে পড়ার বা দুশ্চিন্তা করার কারণ নেই। প্রত্যেকেরই একটা নিজস্ব জীবন রয়েছে, নানারকম কাজ আর দায়িত্বও রয়েছে। তা ছাড়া লম্বা লম্বা টেক্সট করার ধৈর্য অনেকেরই সবসময় থাকে না। তাই মেসেজ পাওয়ার পরমুহূর্তেই তিনি উত্তর দেবেন, বা সব মেসেজেরই উত্তর দেবেন, এমনটা নাও হতে পারে। বিশেষ করে আপনার মেসেজটা আদৌ উত্তর দেওয়ার মতো কিনা সেটাও দেখার বিষয়। ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করুন। সময়মতো উনি নিশ্চয়ই উত্তর দেবেন।
যদি মনের মধ্যে কখনও খুব অশান্তি জমা হয়, তা হলে তা সঙ্গীকে জানান। সম্পর্কে ভৌগোলিক দূরত্ব থাকলে কমিউনিকেশন খুব জরুরি। মনের কথা শেয়ার করলে অনেক অশান্তি কমে যাবে। তবে সঙ্গী বা সঙ্গিনীর সারাদিনের প্রতিটি মুহূর্তের আপডেট চেয়ে পুলিশি জেরা করবেন না যেন! সম্পর্কে আস্থা থাকা চাই।
টাকা জমান। বছরে অন্তত কয়েকবার সঙ্গী বা সঙ্গিনীর কাছে পৌঁছে যেতে যাতে রসদের অভাব না হয়, তার ব্যবস্থা করে রাখুন আগে থেকেই! হাতে রাখুন ট্রাভেল এজেন্ট। একেবারে শেষ মুহূর্তে যাওয়ার প্ল্যান করলেও অসুবিধেয় পড়তে হবে না তা হলে!
পজিটিভ থাকুন। লং ডিসট্যান্স সম্পর্কে নানা চ্যালেঞ্জ আসে, সে সব মোকাবিলা করার জন্য মনের জোর ধরে রাখতেই হবে। পাশাপাশি নিজের স্বাধীন জীবনটাকেও অবহেলা করবেন না, আনন্দ করে বাঁচুন।