আমাদের দেশে এমনিতেই স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সচেতনতা কম। তার উপর যখন তখন টপাটপ নানা ওষুধ কিনে খেয়ে ফেলে ডাক্তারির অভ্যেস আছে ষোলো আনা। কিন্তু জানেন কি, আপনার এই বাতিকের খেসারত দিতে হতে পারে আপনার শরীরের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে?
আজ্ঞে হ্যাঁ, ঠিক পড়েছেন। নিজের উপর ডাক্তারি করতে গিয়ে আমরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে ফেলি কিডনির। কিডনি কীভাবে কাজ করে, তা জানেন নিশ্চয়ই? এই অঙ্গটি হল শরীরের ছাঁকনি। আপনার শরীর থেকে যত তরল বর্জ্য বেরিয়ে যায় রোজ, তার ফাইনাল প্রক্রিয়াকরণ হয় কিডনিতে। তাই শরীরে যত কেমিকাল ঢুকবে, তার অবশেষ জমা হবে এখানেই। ওষুধ মানেই কিন্তু এক বা একাধিক রাসায়নিকের কম্বিনেশন। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনও পেনকিলার, ঘুমের ওষুধ, হজমের ওষুধও খাবেন না, প্রাকৃতিক সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন।
যাঁরা দীর্ঘদিন শরীরকে যথেষ্ট বিশ্রাম দেন না, পুষে রাখেন ভিটামিন ডি-এর অভাবের মতো সমস্যা, তাঁদের কিডনি ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই সুস্থ, স্বাভাবিক জীবন কাটানোর চেষ্টা করুন। সারাদিনে প্রচুর জল খাওয়াও একান্ত প্রয়োজনীয়।
এবার প্রশ্ন, কতটা জল খাওয়া উচিত? প্রাপ্তবয়স্কদের তিন লিটারের কমে চলবে না, 60 কেজি ওজনের প্রাপ্তবয়স্করা সাড়ে চার লিটার পর্যন্ত জল খেতে পারেন। ওজন বেশি হলে বা খুব ঘামলে জল খাওয়ার পরিমাণ আরও একটু বাড়ান। জল আপনার শরীরকে ভিতর থেকে সুস্থ রাখবে। যাঁদের হার্টের অসুখ বা অন্য কোনও সমস্যার কারণে জলপানের উপর বিধিনিষেধ আছে, তাঁরা ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলুন।
আগেই বলা হয়েছে, কিডনি আপনার শরীরের ওয়াশরুম হিসেবে কাজ করে। সেটা পরিষ্কার রাখার চেষ্টাটা আপনাকেই করতে হবে। যাঁদের ইউরিক অ্যাসিড, হাইপারটেনশন বা ডায়াবেটিসের সমস্যা আছে, তাঁরা প্রয়োজনীয় বিধিনিষেধ মেনে চলুন, রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকলে কিডনিও সুস্থ থাকবে। এই দু’টি রোগই কিন্তু কিডনির উপর নেগেটিভ প্রভাব ফেলে৷
যে কোনওরকম দূষণ কিডনির স্বাস্থ্যের ওপর ঋণাত্মক প্রভাব ফেলে। তাই বাইরে বেরোলে মাস্ক পরুন, ধোঁইয়া-ধুলো থেকে দূরে রাখুন নিজেকে। ধূমপানের অভ্যেস থাকলে ছাড়তে হবে, বাড়িতে এয়ার পিউরিফায়ার থাকলে খুব ভালো হয়।
গ্রিন টি পান করলে নাকি কিডনির স্বাস্থ্য ভালো থাকে, সিট্রাস ফল বা নানা ধরনের লেবু খাদ্যতালিকায় থাকলে কিডনিতে চট করে স্টোন হয় না৷ আরও বলা হয় যে, গর্ভাবস্থা থেকেই মায়ের নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল হওয়া উচিত, ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলুন অক্ষরে অক্ষরে৷ একমাত্র তা হলেই শিশুর কিডনির স্বাস্থ্য ভালো থাকবে৷