আজকাল আমাদের সবার জীবনই কাটছে ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের সামনে, তাই না? অফিসের কাজ, মিটিং, আত্মীয় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা – সবটাই হচ্ছে অনলাইনে। ফোন, ট্যাব, কম্পিউটার, ল্যাপটপের বাইরে কিচ্ছুটি হওয়ার জো নেই। অবসর মানে হয় টিভি, না হলে মাঝ রাত পর্যন্ত ফোনে সিনেমা বা ওয়েব সিরিজ। আর এ সবের মাসুল দিচ্ছে আমেদের ত্বক, বিশেষ করে মুখের ত্বক।
যে কোনও ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে ব্লু লাইট বিচ্ছুরিত হয়, তা কার্যত সূর্যের আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মির চেয়েও বেশি ক্ষতি করে আমাদের ত্বকের – কারণ এই আলোর উৎসের খুব কাছেই থাকি আমরা। আমাদের সবার ত্বকই ফোটো সেনসিটিভ, যাদের এমনিতেই স্পর্শকাতর ত্বক, তাদের ক্ষেত্রে তো সুরক্ষার বেড়া আরও নড়বড়ে। ফলে পিগমেন্টেশন বা বলিরেখার মাত্রাও বেশি হবে।
ব্লু লাইটে ত্বকের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বাড়ে, তাই যে সব ছাত্রছাত্রী সারাদিন কম্পিউটারের সামনে বসে অনলাইন ক্লাস করছে, তাদের ত্বকের স্বাস্থ্যও খারাপ হতে আরম্ভ করবে। আলোর প্রভাবে মেলানোসাইট বেশি কার্যকর হয়ে উঠবে, ফলে মেচেতা বা সাদা দাগও হতে পারে। ফোনের স্ক্রিনের দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকার সময় আপনার অজান্তেই হয়তো ভুরু কুঁচকে থাকে – তাতেও কিন্তু ত্বকের ক্ষতি হয়। সেই সঙ্গে বারোটা বাজে ঘুমের, সেটাও ত্বকের স্বাস্থ্যের পক্ষে হানিকারক।
এই সমস্যা থেকে বাঁচার উপায়ও আছে, সেগুলি মানতে আরম্ভ করুন আজ থেকেই!
. নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করে ফেলুন – কারণ একটাই, আপনাকে স্ক্রিন টাইম কমাতে হবে। অহেতুক সোশাল মিডিয়ায় ঢুকে তিন ঘণ্টার কাজ ছয় ঘণ্টায় শেষ করবেন না।
. যাঁদের প্রচুর ভিডিও কল করতে হয়, তাঁরা অবশ্যই ব্লু লাইট ফিল্টার লাগান আপনার গ্যাজেটে। তাতে ক্ষতি খানিকটা হলেও আটকাবে।
. সারাক্ষণ ফোন বা গ্যাজেট নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন না, মানুষের সঙ্গে মুখোমুখি কথা বলুন, বই পড়ুন।
. ঘরের বাইরে পা রাখুন। বাড়ির ছাতে বা লনে হাঁটাহাঁটি করুন, যোগব্যায়াম করতে পারেন। দিনের কোনও একটা সময় নিজের জন্য খানিকক্ষণ বরাদ্দ রাখুন।
. সঠিক ময়েশ্চরাইজার ব্যবহার করুন। কোলাজেন সমৃদ্ধ ক্রিম বা বিশেষ ট্রিটমেন্ট ট্রাই করে দেখতে পারেন। স্নানের পর অল্প ভেজা মুখে নারকেল তেল লাগান, তা সিরামের মতো কাজ করবে। এক্সফোলিয়েট করুন নিয়ম মতো। সর, ময়দা, বেসনের প্যাক কোমলভাবে ত্বক পরিষ্কার রাখবে।
. ডায়েটের দিকে নজর দিন। ভালো ফ্যাট রাখুন খাদ্যতালিকায়। বাদাম, অ্যাভোকাডো, তৈলাক্ত মাছ খেতে হবে নিয়ম করে।