আপনার বাচ্চা খুব দুষ্টু এবং তাকে একা বাড়িতে রেখে আপনাকে বাইরে সময় কাটাতে হয়? বাবা বা মা সারাদিন বাড়িতে থেকে বোর হয়ে গিয়েছেন? নাকি সন্ধের পর আপনার নিজের সময় কাটতে চায় না? পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, উত্তর একটাই – আপনি পাজল বা ধাঁধার সমাধান করতে আরম্ভ করুন।
শব্দছক, রুবিক্স কিউব, জিগশ – নানা ধরনের পাজল আছে, যা একেবারে ছোটো শিশু থেকে আরম্ভ করে বয়স্ক মানুষ পর্যন্ত সবাই ব্যবহার করে দেখতে পারেন। যাঁরা তেমন কিছু করার নেই বলে টিভি বা ওয়েব সিরিজ দেখেন, তাঁরা বরং পাজলের নেশা করুন – দেখবেন, জীবন কীভাবে বদলে যায়!
এখানে একটা কথা বলে রাখা ভালো, বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে পাজলের ব্যবহার বহু হাজার বছরের পুরোনো। প্রাচীন চিন, মিশরীয় সভ্যতায় তার বহুল প্রচলন ছিল। ক্রসওয়ার্ড বা শব্দছক প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯১৩ সালে, রুবিক্স কিউবের আবিষ্কার হয় ১৯৭৪ সালে। ১৭৬৭ তে তৈরি হয়েছিল জিগশ পাজল।
কেন পাজলকে এত গুরুত্ব দেওয়া হয়?
১. পাজল আপনার মস্তিষ্কের ডান আর বাম, দুটো দিককেই একসঙ্গে কর্মক্ষম রাখে। ব্রেনের বাম দিকের অংশ নিয়ন্ত্রণ করে অ্যানালিটিকাল ও লজিকাল চিন্তাভাবনার ক্ষমতা, ডান দিকের ফলে কার্যকর হয় আপনার মৌলিক চিন্তাভাবনা। পাজল সলভ করলে একসঙ্গে দু’টিই কার্যকর থাকবে। ব্রেনের ব্যায়াম হবে।
২. আপনার ব্রেন যদি ঠিকভাবে কর্মক্ষম হয়, তা হলে স্মৃতিশক্তি উন্নত হবে। বিশেষ করে শর্ট টার্ম মেমারি আরও ভালো করে তুলতে পাজলের ভূমিকা অতি গুরুত্বপূর্ণ। অ্যালজাইমার্স পেশেন্টদের ক্ষেত্রে পাজল থেরাপি খুব ভালো কাজ দেয়। যাঁদের পরিবারে এই অসুখের চল আছে, তাঁরা এখন থেকেই ধাঁধা সমাধানের অভ্যেস গড়ে তুলুন।
৩. ছোটো থেকে পাজল অভ্যেস করলে গড়ে ওঠে প্রবলেম সলভিং স্কিল। নানা ধরনের ট্রায়াল অ্যান্ড এরর পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে সমাধানে পৌঁছনোর অভ্যেস তৈরি হলে তা লেখাপড়ার কাজেও লাগে।
৪. খুব সফলভাবে একটা পাজল শেষ করতে পারলে ব্রেন থেকে ডোপামাইনের ক্ষরণ হয়। তা মুড ভালো রাখে, স্মৃতিশক্তি বাড়ায়, মনঃসংযোগে সাহায্য করে। বিশেষ করে বয়স্কদের ক্ষেত্রে দারুণ কাজে দেয় এই টোটকা।
৫. স্ট্রেস লেভেল কমাতে আর আইকিউ বাড়াতে পাজলের জুড়ি নেই। তাই আজ থেকেই তা সলভ করার অভ্যেস গড়ে তুলুন। খুব রিল্যাক্সড থাকবেন, রাতে ভালো ঘুমও হবে।