আকাশে কালো মেঘ জমলেই আর বিছানা ছেড়ে উঠতে ইচ্ছে হয় না, তাই না? সেই সঙ্গে ঝিমুনি চেপে ধরে, কাজে মন বসে না, খিচুড়ি, ভাজাভুজি আর ধোঁওয়া ওঠা চায়ের কাপের জন্য মনটা বড্ড আকুল হয়ে ওঠে। এর কোনওটাই স্রেফ আপনার একার সমস্যা নয় – বরং এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক।
ঘুম নিয়ে যাঁরা গবেষণা করেন, তাঁরা একটা ব্যাপারে খুব নিশ্চিত – সূর্যের আলো আমাদের জেগে থাকা আর ঘুম পাড়ানোর ব্যাপারে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। তাই যেদিন আকাশ মেঘের চাদরে ঢাকা থাকে, সেদিন আপনার শরীর বুঝতেই পারে না তার ঘুমে পালা সাঙ্গ হয়েছে – সকালে উঠতেই দেরি হয়ে যায়।
রোদ্দুরের সঙ্গে সঙ্গে শরীরে সেরোটনিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়ার কথা, তার ফলে আপনি চনমনে আর ফ্রেশ থাকবেন। আর অন্ধকার নামলেই বাড়ে মেলাটোনিন হরমোনের দাপট। তা আপনার উত্তেজিত স্নায়ুগুলিকে ধীরে ধীরে ঘুমের জন্য প্রস্তুত করে। তাই যেদিন আকাশ কালো করে মেঘের চাদর বিছানো থাকবে, সেদিন ঘরে জোরালো আলো জ্বেলে রাখুন। না হলে অফিসের কাজের মাঝখানেই ঘুমিয়ে পড়বেন ডেস্কে মাথা রেখে!
বাতাসের বাড়তি আর্দ্রতা কিন্তু ক্লান্তিবোধের আর একটা কারণ। ভারী, চিটচিটে বাতাস, ঘরের মধ্যেই মেলে রাখা ভেজা জামাকাপড় পরিবেশ আরও ঘুমোট করে দেয়। তাই জানলা-দরজা বন্ধ করে রাখবেন না – তা হলে কিন্তু মন খারাপের ভাবটা আরও নাছোড়বান্দা হয়ে চেপে বসবে।
সেই সঙ্গে ঘরের মধ্যেই হাঁটাচলা করুন, অ্যাকটিভ থাকার চেষ্টা করুন যতটা সম্ভব। বিশেষ করে যাঁরা ডিপ্রেশনে ভোগেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই দিনগুলো আরও কঠিন হয়ে উঠতে পারে। তবে খেয়াল রাখবেন, ব্যাপারটা একেবারেই হরমোনাল। এই এনার্জির অভাব বা ক্লান্তিবোধ কাটিয়ে ওঠার জন্যই হাই ক্যালোরি খাবার বা গরম পানীয়ের একটা চাহিদা তৈরি হয় শরীরে।
ঘুমভাব কাটাতে চা বা কফি খুব কাজে দেয় ঠিকই, কিন্তু তা কখনওই জলের বিকল্প হতে পারে না – সে কথাও মনে রাখবেন। বেশি কফি খেলে আবার রাতে ঘুম আসবে না চট করে। হালকা গরম জলে সামান্য লেবু মিশিয়ে পান করুন, তা-ও শরীর আর্দ্র রাখবে।
সেই সঙ্গে খেয়াল রাখবেন, একদিন দুপুরে ঘুমোলে বা খিচুড়ি-ইলিশভাজা খেলে কিচ্ছু মহাভারত অশুদ্ধ হবে না! তবে আধ ঘণ্টার বেশি ঘুমোবেন না, তাতে শরীর ডিপ স্লিপ সাইকেলে ঢুকে যাবে। সেই অবস্থা থেকে জেগে ওঠার পরে শরীর ভারী হয়ে যায় – চট করে কাজে মন বসাতে পারবেন না তার পরে।