অনেকেরই সঞ্চয় করার অভ্যেস থাকে না একেবারেই। যা আয় হয়, তার পুরোটাই ব্যয় করে ফেলেন। কিন্তু প্যান্ডেমিকের কয়েকটা মাসে নিশ্চয়ই বুঝে গিয়েছেন যে আপনি নিজে টাকা জমিয়ে না রাখলে কেঊ পাশে এসে দাঁড়াবে না? অনেকের আশা ছিল, যাঁরা কাজ হারিয়েছেন, তাঁদের আলোর দিশা দেখাবে বাজেট। সে গুড়েও বালি, বুঝেই গিয়েছেন তো? তাই কোমর বাঁধুন।
টাকা বাঁচানোর একমাত্র উপায় সচেতন হওয়া। আপনার রোজগার যত কমই হোক না কেন, তার মধ্যে থেকে একটা ভাগ সরিয়ে রাখতে হবে। অনেকেরই উপার্জন কমে গিয়েছে, তাই খরচও কমাতে হয়েছে। গাড়ির বদলে হয়তো ট্যাক্সি বা বাসে চড়তে হচ্ছে, কিন্তু তার মধ্যেও কিছু টাকা সরিয়ে রাখুন। এক টাকা সরানো মানেই এক টাকা উপার্জন – এই বেসিক নিয়মটা মনে রাখবেন।
যাঁদের রোজগার সেই অর্থে কমেনি, তাঁরাও সতর্ক হোন। অনেকের কেনাকাটার বাতিক থাকে, কিছুতেই সে নেশা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে মেনে চলুন ৩০ দিনের নিয়ম। মানে যে জিনিসটা কিনতে খুব ইচ্ছে করছে, সেটা আপনার শপিং কার্টে রাখুন ৩০ দিনের জন্য। তার পরেও যদি ইচ্ছেটা বজায় থাকে, তা হলে কিনবেন। সেক্ষেত্রে ধরে নিতে হবে যে সেটি আপনার সত্যিই প্রয়োজন ছিল।
বাজেট তৈরি করুন আর সেটা মেনে চলুন প্রতি মাসে। এক খাত থেকে অন্য খাতে টাকা খরচ করতে গেলেও আপনাকে নিজের কাছে হিসেব দিতে হবে। নিজের ধার কখনও ফেলে রাখবেন না, যত সমস্যাই হোক না কেন, আগে সেটা শোধ করুন। অনেকে এই নিয়মটা মানেন না বলেই সঞ্চয় তো দূর অস্ত, উলটে সাধ্যের বেশি খরচ করে ফেলেন। ১০ টাকা বাড়তি খরচ মানেও কিন্তু ঋণের বোঝা বাড়ল – সেটা খেয়াল রাখবেন।
নিজের সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে কিছু করবেন না। টাকা থাকুক বা না থাকুক, এই নিয়মটা মেনে চলতেই হবে। খুব বিলাসবহুল জীবন না কাটিয়েও খুশি থাকা যায়। আপনার প্রায়োরিটিগুলো কী, তার একটা তালিকা বানান আগে। বাচ্চার লেখাপড়া, পুরো পরিবারের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখা, বাজার-দোকান, সহায়কের মাইনে, যাতায়াতের খরচ, ধোপা-মুদিখানা, বিদ্যুতের বিল, বাড়ির মেনটেনেন্স, হাউসিং লোন মেটানো যেমন অত্যাবশ্যক খরচের তালিকায় পড়ে, সেভাবেই কিছু টাকা সঞ্চয় করাও একইরকম জরুরি।