ডিজিটাল লেনদেন যত বাড়ছে, তত বাড়ছে জালিয়াতির বহর! কিছুদিন আগেই এক নামজাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা অচেনা নম্বর থেকে একটি ফোন পান, তাঁর ফোনের কলার আইডেন্টিফিকেশন অ্যাপ জানায় যে সেটি ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের নম্বর। যিনি ফোন করেছিলেন, তিনি ভদ্রমহিলার KYC ডিটেলস জানতে চান। একটি লিঙ্কে ক্লিক করতে বলেন – তেমনটা করার সঙ্গে সঙ্গেই খালি হয়ে যায় অধ্যাপিকার সেভিংস অ্যাকাউন্টে সঞ্চিত টাকাপয়সা।
তাই খুব সতর্ক হয়ে পা ফেলতে হবে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অর্থের বেআইনি লেনদেন বন্ধ করার উদ্দেশ্য নিয়ে KYC (Know Your Customer) বা গ্রাহক সম্পর্কে বেসিক কিছু তথ্য জানার নিয়মটা চালু করেছিল। ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট-মিউচুয়াল ফান্ড করতে গেলে বা ফোনের নতুন সিমকার্ড নিলেও আপনাকে KYC দিতে হবে। আপনার সাম্প্রতিক ব্যক্তিগত তথ্য, অর্থাৎ নাম-ঠিকানা-ফোন নম্বর-বয়স ইত্যাদি হচ্ছে আপনার KYC।
একটা জরুরি তথ্য জেনে রাখুন — অনলাইন KYC আপডেট বার বার করতে হয় না, তাই হুট করে ব্যাঙ্কের নাম করে কেউ ফোন করলেই ব্যতিব্যস্ত হয়ে সব তথ্য শেয়ার করবেন না। উপযাচক হয়ে ব্যাঙ্কের কোনও কর্মী আপনার KYC আপডেট করতে চাইলেও রাজি হবেন না, কারণ কাজটা এক এবং একমাত্র আপনাকেই করতে হবে। কলার আইডেন্টিফিকেশন অ্যাপে নিজের নাম ব্যাঙ্কের ম্যানেজার হিসেবে সেভ করে রাখতে খুব বেশি কাঠখড় পোড়াতে হয় না – তাই এ সব দেখে ভুলবেন না।
কোন কোন ক্ষেত্রে KYC আপডেট করতে হয় জানেন?
১. যদি আপনার নাম বা পদবীতে কোনও পরিবর্তন আসে, তা হলে সেটা ব্যাঙ্ক বা যে কোনও আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রেই আপডেট করা দরকার। PAN কার্ড, Adhaar কার্ড, ভোটার আইডি, পাসপোর্ট সর্বত্রই আপনাকে এই পরিবর্তনটা করতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় আগে Adhaar কারেকশন করে নিলে – এই একটি নথির স্ক্যানড কপি সর্বত্র আপলোড করে আপনাকে KYC আপডেট করতে হবে।
২. যদি আপনার ঠিকানায় পরিবর্তন হয়, তা হলেও KYC বাবদ জমা দেওয়া তথ্য আবার আপডেট করতে হবে। বিয়ের পর মেয়েদের ঠিকানা পালটায়, চাকরি বা অন্য কোনও কারণে শহর বদলালেও KYC ফর্ম ফিল আপ করতে হবে।
৩. KYC আপডেট করার পরে অথেন্টিকেশনের কাজ পূর্ণ হতে অন্তত সপ্তাহখানেক সময় লাগে। সেই সময়ের মধ্যে তা না হলে আপনার ব্রাঞ্চে খোঁজখবর করতে হবে।
যে ব্যাঙ্ক বা সংস্থায় আপনি KYC পাঠাবেন, তাদের পোর্টাল বা অ্যাপটা খতিয়ে দেখে নিন। অনলাইনে KYC আপডেট করার অপশন থাকলে সেখানে ক্লিক করে প্রয়োজনীয় তথ্য জানান। হাতের কাছে সমস্ত তথ্যের স্ক্যানড কপি রাখবেন, ইন্টারনেটের স্পিড ভালো হওয়াও জরুরি – তাতে আপলোড করা সহজ হবে।