ঘরবন্দি থাকতে থাকতে একটা বছর কেমন শেষ হয়ে গেল চোখের সামনে! অবশেষে দুয়ারে হাজির মায়াবি শীতকাল, এ সময়ে প্রাণটা বাইরে বেরনোর জন্য ছটফটিয়ে ওঠে একেবারে, তাই না? আপাতত যা পরিস্থিতি, তাতে করোনা ভাইরাসের দাপট অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে, গোটা দেশেই কমেছে অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা। তাই কাছে-পিঠে কোথাও একটা ঘুরে আসতেই পারেন। তবে সাবধান থাকতে হবে প্রতি পদে।
ভুললে চলবে না, কোভিড ১৯ রেসপিরেটরি ডিজিজ, অর্থাৎ ভাইরাস হামলা চালাচ্ছে মূলত শ্বাসযন্ত্রের উপর সঙ্গে থাকছে আরও নানা উপসর্গ। তাই যাঁরা সিওপিডি বা হাঁপানির রোগী, তাঁরা বেশি সাবধানে থাকুন। যে যে ভ্যাকসিন নিলে শরীর ভালো থাকে, সেগুলি নিয়ে রাখবেন সময় মতো। খুব বেশি ধুলো বা ধোঁওইয়ায় যাবেন না, দূরে থাকুন ফুলের বাগানের মতো জায়গা থেকেও — কারণ পরাগ রেণু থেকেও অ্যালার্জি হতে পারে।
এসব সমস্যা যাঁদের নেই, তাঁরা যদি পূর্ণ সুস্থ হন, তা হলে অবশ্যই ছোটোখাটো আউটিং সেরে আসতে পারেন। গাড়ি ভাড়া করে গেলে গাড়িটি ভালো করে স্যানিটাইজ করে নিন, নিজেদের খাবার আর জল ক্যারি করুন। কাছাকাছি ট্যুরিস্ট বা পিকনিক স্পটে খোঁজ নিন। যদি মনে হয় সব জায়গাতেই খুব ভিড়, তা হলে বাড়ির ছাদে বা বাগানেই পিকনিকের প্ল্যান করে ফেলুন না! সবাই মিলে একসঙ্গে আনন্দ করা হবে, আবার বিপদের কোনও আশঙ্কাও থাকবে না!
খুব ভিড়ের মাঝে যাওয়া কিন্তু এখনও বিপজ্জনক, সোশাল ডিসট্যান্সিং মেনে চলতেই হবে। ভাইরাসের চরিত্র সম্বন্ধে এখনও খুব নিশ্চিত হয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না, তার উপর যে কোনও ভাইরাসই খুব তাড়াতাড়ি মিউটেট করে। বড়োদিন আর নতুন বছর উদযাপন করতে অনেকেই বাড়ির বাইরে পা রাখবেন, আর তখনই ভাইরাসে কবলে পড়ার ভয় থাকছে। ইউরোপ ও আমেরিকায় যেহেতু রোগ এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি, তাই সেখানে বাইরে বেরনোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে পূর্ণ মাত্রায়।
আর একটা কথা, পিকনিক যেখানেই করুন না কেন, বর্জ্য ফেলে রাখবেন না কোথাওই। পরিবেশরক্ষা করার দায় আমাদের সবার – তাই সারা দিন খাওয়াদাওয়ার পর যা থালাবাসন, উচ্ছিষ্ট ইত্যাদি হবে, তা ক্যারি করে আনুন নিজের সঙ্গে, সুবিধেমতো জঞ্জাল ফেলার জায়গায় ফেলে দিন। প্লাস্টিকের বোতল বা প্যাকেট চলন্ত গাড়ির জানলা গলিয়ে ফেলে দেওয়াও খুব অন্যায়।