দিন কয়েক আগেই বেলঘরিয়ানিবাসী এক অধ্যাপক বিচিত্র এক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। খবরের কাগজে প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, তাঁর কম্পিউটার খুব স্লো চলছিল কয়েকদিন ধরে, তাই তিনি ইন্টারনেট থেকে এক অ্যান্টি ভাইরাস ডাউনলোড করেন মেশিনে।
ভাইরাস লোড হওয়ার পর গ্যাজেট রি-স্টার্ট করতে গিয়ে দেখেন কোনও ডকুমেন্ট অ্যাকসেস করতে পারছেন না। খানিক্ষণ ব্যর্থ চেষ্টার পর তাঁর কাছে একটি মেসেজ আসে – বিরাট টাকার বিনিময়ে তিনি ফেরত পেতে পারেন অ্যাকসেস। ভদ্রলোক পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগের দ্বারস্থ হন – সমস্যার সমাধান এখনও হয়নি।
পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে এটি ম্যালওয়্যার অ্যাটাক। একদল পেশাদার হ্যাকার এইভাবে আপনার সিস্টেম দখল করে নিতে পারে সামান্য অসতর্কতার সুযোগ নিয়ে। তার পর আপনার সব ফাইল তারা এনক্রিপ্ট করে দিয়ে টাকা দাবি করবে, তবে টাকা দেওয়ার আগে সাবধান – লেনদেন হয়ে গেলেই যে আপনি সব ফাইল আগের অবস্থায় ফিরে পাবেন, তার কোনও গ্যারান্টি নেই কিন্তু!
কিছুদিন আগে পর্যন্ত মনে করা হত, বড়ো বড়ো সংস্থাই কেবল ম্যালওয়্যারের শিকার হয়। তাই অফিসের সিস্টেমে নিয়মিত পাসওয়ার্ড বদলাতে বলা হয়। একেবারে ব্যক্তিগত স্তরের আক্রমণ সাধারণত হত না, কিন্তু ইদানীং সে সব নিয়ম পালটে যাচ্ছে। যাঁরা খুব বেশি ফ্রি ওয়াই-ফাই জোন ব্যবহার করেন, তাঁদের ফোন বা ল্যাপটপে র্যানসামওয়্যার হানা দেওয়ার আশঙ্কাও বেশি।
হয়তো আপনার ডেটা এমন কোনও সংস্থার কাছে ছিল যারা র্যানসামওয়্যার অ্যাটাকের শিকার হয়েছে এর মধ্যে – সেখান থেকে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা হয়ে থাকতে পারে। সাধারণত বড়ো কোনও সংস্থা র্যানসামওয়্যার অ্যাটাকের শিকার হলে গ্রাহকদের জানিয়ে দেয়। তেমন কোনও মেল পেলে পাসওয়ার্ড বদলে ফেলুন।
. যাঁরা নেটব্যাঙ্কিং সহ নানা অনলাইন লেনদেন করেন, তাঁরা বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করুন। কঠিন পাসওয়ার্ড বাছুন। সব অ্যাকাউন্টে এক ধরনের পাসওয়ার্ড রাখবেন না।
. সমস্ত জরুরি তথ্যের ব্যাক আপ রাখুন। ক্লাউড বা এক্সটার্নাল হার্ড ড্রাইভে তা রাখতে পারলে ভালো হয়।
. সন্দেহজনক মেসেজ বা লিঙ্কে ক্লিক করবেন না। কোনও সফটওয়্যার ডাউনলোড করার সময় বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করুন।
. বাড়ি থেকে অফিসের কাজ করছেন? ব্যবহার করুন নিরাপদ ভিপিএন – যে কোনও ওয়াই ফাইতে ভরসা রাখবেন না।
. র্যানসাম দেবেন না, পুলিশে অভিযোগ জানান আগে।