জীবনযাপনের খরচ কেবলই বাড়ে, কমে না কোনওদিন। এটুকু সত্যি আমরা সবাই জানি। এই ভাবনা মাঝবয়সে পৌঁছে অনেককেই বিব্রত করে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, সংসারের খরচ তখন বাড়তে বাড়তে এমন একটা জায়গায় গিয়ে পৌঁছয় যে চাইলেও মাসের শেষে হাতে খুব বেশি টাকা বাড়তি থাকে না। তাই এসব চিন্তাভাবনা শুরু করা উচিত আরও আগে থেকে। কিন্তু ঠিক কোন সময়টা ঠিক সময়?
উত্তর হচ্ছে, চাকরি জীবনের একেবারে প্রথম থেকেই অবসরের প্ল্যানিং শুরু করা উচিত – একমাত্র সে ক্ষেত্রেই ভালো সঞ্চয় করে রাখা যায়। আপনি যা মাইনে পান, তার একটা অংশ ব্যবহার করুন নিজের ও সংসারের খরচ চালাতে, একটা অংশ থাকবে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে খরচ করার জন্য। আর একটা অংশ বার্ধক্যের খরচ চালানোর জন্য জমা করে রাখতে হবে।
অনেকেই বলবেন, সংসারের খরচ চালানোর পর হাতে খুব বেশি টাকা বাঁচে না। তা হলে বলতে হবে যে আপনি সাধ্যেরর চাইতে বেশি টাকা খরচ করছেন। যা মাইনে, তার পুরোটা খরচ করা যাবে না, অন্তত জীবনের গোড়ার দিকে। সরিয়ে রাখতে শিখতেই হবে আপনাকে। তা না হলে পরে পস্তাবেন।
সেই সঙ্গে বুদ্ধিমানের মতো বিনিয়োগ করাও একান্ত জরুরি। তা না হলে বড়ো টাকার তহবিল তৈরি করতে পারবেন না। জেনে নিন কোন কোন খাতে টাকা জমালে ভালো রিটার্ন মিলবে। যাঁরা সরকারি চাকরি করেন, তাঁরা হয়তো ভাবছেন যে আলাদা করে পেনশন খাতে টাকা জমিয়ে রাখার প্রয়োজন নেই। ভুল ভাবছেন। বয়সকালে অসুখ, ওষুধের খাতে অনেক টাকা খরচ হয়।
ন্যাশনাল পেনশন স্কিম
যোগ দিতে পারেন ১৮-৬৫ বছর বয়সই সব ভারতীয়। বছরে অন্তত একবার টাকা জমা দিতেই হয়, ১০০০ টাকার কম রাশি রাখা যাবে না। এবার সারা বছর যখন খুশি, যতবার খুশি আপনি ৫০০ টাকার বেশি রাশি জমা রাখতে পারেন। যে টাকা জমা রাখা হল, তার একটা অংশ – প্রায় ৬০% হাতে পাবেন মেয়াদ শেষে, এর ৪০% করমুক্ত। বাকি টাকাটা দিয়ে আপনাকে বাজার থেকে অ্যানুয়িটি স্কিম কিনে তার বিনিময়ে পেনশন উপার্জন করতে হবে।
অ্যাকাউন্ট খোলা যায় যে কোনও সরকারি বা বেসরকারি ব্যাঙ্কে। রেজিস্ট্রেশনের জন্য লাগবে আধার কার্ড আর বার্থ সার্টিফিকেট।
মিউচুয়াল ফান্ড
যদি ঝুঁকি নিতে অসুবিধে না থাকে, তা হলে মিউচুয়াল ফান্ড প্রকল্পে টাকা রাখুন। এসআইপির মাধ্যমে জমালে ভালো টাকা জমা হবে। তবে ফান্ড বাছাই করার আগে একবার ফাইনানশিয়াল অ্যাডভাইসরের সঙ্গে কথা বলে নেবেন।
পিপিএফ
যে কোনও উপার্জনশীল মানুষ টাকা রাখতে পারেন টানা ১৫ বছর, তার পর ৫ বছর করে তার মেয়াদ বাড়িয়ে নেওয়া যায়। বছরে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা ও সর্বাধিক ১.৫ লক্ষ টাকা জমা রাখা সম্ভব। পোস্ট অফিস ও ব্যাঙ্কের শাখায় টাকা রাখা যায়।