ফের বাড়ি থেকে বেরনো বন্ধ। সারাদিন ঘরে আটকে থাকলে নড়াচড়া হয় না মোটে, কিন্তু একঘেয়েমি কাটানোর জন্য মাঝে-মধ্যেই মুখরোচক কিছু খেতে ইচ্ছে হয়। হয়তো আপনার রেস্তোরাঁয় খাবার অর্ডার করার রেস্ত নেই পকেটে, কিন্তু বিকেলের দিকে মুচমুচে করে পেঁয়াজি তো ভেজে নেওয়াই যায়! বা জলখাবারে আলুর দমের স্বাদ ভালো হলে ক’টা লুচি বেশি খাওয়া হয়ে যায় অক্লেশে – সঙ্গে বোঁদে থাকলে তো কথাই নেই!
এই বাড়তি খাওয়া মানেই সমস্যা। এখন আবার করোনা ভাইরাসকে ঠেকাতে দেদার প্রটিন খাচ্ছেন অনেকে, সঙ্গে প্রোটিন সাপ্লিমেন্টও আছে। তার ফলেও ওজন বাড়তে পারে কিন্তু। যাঁদের কিডনি বা লিভার একটু নড়বড়ে, তাঁরাও বাড়তি প্রোটিন খেলে বিপদে পড়বেন। ওজন বাড়ছে মানেই আপনি যা খাচ্ছেন, তার পুরোটা কাজে লাগছে না – ফলে শরীর বাড়তি অংশটুকুকে মেদ হিসেবে জমিয়ে রাখছে। সেই সঙ্গে কিন্তু আপনার সুগার, প্রেশার কোলেস্টেরলের সমস্যাও বাড়বে।
কে না জানে যে এই অতিমারির সময়ে বাড়তি ওজন বা সুগার-প্রেশারের বাড়াবাড়িতে রোগী খুব অল্প সময়ের মধ্যেই মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছেন? তাই আজ থেকে সচেতন হোন, খানিক হাঁটাচলা করা দরকার রোজ, বাড়ির ছাদ বা বারান্দায় পায়চারি করলেও চলবে। সেই সঙ্গে নিয়ম মেনে খাওয়াদাওয়া করুন।
অনেকেই প্রশ্ন করবেন, কতটা খাবার শরীরের জন্য জরুরি তা বোঝার উপায় কী? এ ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে সেলেব্রিটি ডায়েটিশিয়ান রুজুতা দিওয়েকর ‘জর্ডন ফর্মুলা’র কথা বলেছেন। জর্ডনে নাকি অতিথি আপ্যায়নের বিশেষ একটি রীতি প্রচলিত আছে। বাড়িতে কেউ বেড়াতে এলে তাঁকে কফি আর একটি খেজুর দেওয়ার প্রথা সেখানে বহুদিন প্রচলিত। এক কাপ পানীয় আর খেজুর শেষ হলেই আপনাকে দ্বিতীয়টি দেওয়া হবে, কিন্তু সেখানেই থামা যাবে না। দুই নম্বর নিলে আপনাকে তৃতীয়টিও খেতে হবে।
সোজা কথায়, জোড় সংখ্যায় থামলে গৃহস্থের অকল্যাণ হবে – থামতে হবে তিন, পাঁচ বা সাত নম্বরে। এবার ঠান্ডা মাথায় এর পিছনের বিজ্ঞানটা ভেবে দেখুন। ধরুন আপনি খেতে বসেছেন, বাড়িতে দারুণ রান্না হয়েছে। এক হাতা ভাত বা একটা মুরগির ঠ্যাং খাওয়ার পরে আশ মিটছে না, আর একবার নেওয়ার সাধ। দ্বিতীয়টি তখনই নেওয়া উচিত, যখন তিন নম্বরটি খেতেও অসুবিধে হবে না। যদি মনে হয় তা পারবেন না, তা হলে প্রথমটাতেই থেমে যান, আপনার পাকস্থলী সেটুকু সহজে হজম করতে পারবে।
টানা মাস দুয়েক এই নিয়ম মেনে চললে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন শরীর হালকা হতে আরম্ভ করেছে। ভালো হয়েছে আপনার হজমশক্তি, আগের মতো কথায় কথায় অ্যান্টাসিড লাগছে না। সঙ্গে যদি খানিকটা ব্যায়াম মেশাতে পারেন, তা হলে খুব তাড়াতাড়ি ওজন কমতে আরম্ভ করবে।