এ কথা বেশ মনে আছে যে আগেরদিন কোথাও চোট লাগেনি, তা হলে হাতে যন্ত্রণা হচ্ছে কেন? পা মচকায়নি, তা হলে প্রতিটি পদক্ষেপ ফেলতে গেলে কেনই বা ব্যথায় ভুরু কুঁচকোচ্ছে? এই ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি কি আপনাকেও দাঁড়াতে হয়?
তা হলে জেনে রাখুন, ক্ষেত্রবিশেষে কারণ আলাদা হতে পারে, তবে সাধারণত আপনার শরীরে যদি ইনফ্লামেশন বা প্রদাহের মাত্রা বেড়ে যায়, তা হলে এই ধরনের আচমকা ব্যথা হতে পারে।
ইনফ্লামেশন বা প্রদাহ কাকে বলে?
প্রদাহ হচ্ছে আপনার শরীরের নিজস্ব ডিফেন্স মেকানিজ়ম। মানে, ইনফেকশন, চোট-আঘাত বা অসুখ-বিসুখ নিরাময়ের জন্য শরীর শ্বেত রক্তকণিকা, সাইটোকাইন আর ইমিউন সেল তৈরির মাত্রা বাড়ায়। তাতে আমরা রোগের সঙ্গে লড়ার শক্তি পাই ও তাড়াতাড়ি সেরে উঠি।
ইনফ্লামেশনের কারণে কী কী হতে পারে
কিন্তু অনেক সময় শরীর অসুখ ছাড়াই এগুলি তৈরি করতে আরম্ভ করে, বাইরে থেকে তা সব সময় বোঝাও যায় না। দীর্ঘদিন শরীরে এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিস, ফ্যাটি লিভার, অ্যালার্জি, হৃদযন্ত্রের নানা সমস্যা ইত্যাদিও হতে পারে।
কাদের ইনফ্লামেশন বেশি হয়?
যাঁরা চিনি, ফ্রুট সিরাপ, প্রসেসড আর প্যাকেটজড খাবার, মদ, সাদা ময়দাজাতীয় রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট খুব বেশি পরিমাণে খান, তাঁদের ইনফ্লামেশনে ভোগার আশঙ্কা বেশি। খুব বেশি স্ট্রেস বা সেডেন্টারি লাইফস্টাইলও এই সমস্যা ডেকে আনতে পারে।
এ থেকে মুক্তির কোনও রাস্তা আছে কী?
ভালো খবরটা হচ্ছে, কিছু সাধারণ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করালেই বোঝা যায় আপনি সত্যিই ক্রনিক প্রদাহের সমস্যায় ভুগছেন কিনা। আর সেই সঙ্গে জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনা দরকার, তা হলেই ধীরে ধীরে আরাম মিলবে।
খেয়াল রাখবেন
এখন আমরা দিনের সিংহভাগ সময়টাই গৃহবন্দি, কাজেই শারীরিক সক্রিয়তা বলতে গেলে কিছুই নেই। তার উপর বাড়িতে বসে বসে একটানা অফিসের কাজ করার ফলে পিঠ, কোমরের উপর বিশ্রী চাপ পড়ে স্টিফনেস তৈরি হতে পারে। ক্যালসিয়াম মেটাবলিজমের হার কমে গিয়েও ব্যথা হয়। গায়ে রোদ লাগে না বলে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি হওয়া খুব স্বাভাবিক এবং সেজন্যও ব্যথা হতে পারে।
কী করা উচিত
একটানা কোথাও বসে কাজ করবেন না। মাঝে মাঝে উঠে দু’পাক হেঁটে নিন। যখন চেয়ারে বসছেন, তখন পিঠ সোজা, টানটান রাখুন। বিছানা বা সোফায় ল্যাপটপ রেখে ঘাড় গুঁজে বসে কাজ করবেন না। স্ট্রেচিং আর কিছু ব্যায়াম করা এবং হাঁটাও একান্ত দরকারি।
ওজন বাড়তে দেবেন না
বাড়তি ওজনের চাপ কিন্তু আপনার পায়ে, কোমরে, হাঁটুতে ব্যথার অন্যতম কারণ হয়ে উঠতে পারে। তাই নিয়মিত এক্সারসাইজ করুন, নিয়ম মেনে হিসেব করে খান।