আমরা সবাই জানি, খাবার আমাদের শক্তি জোগায়, আবার হিসেবের বাইরে গিয়ে খাওয়াদাওয়া করলে অসুস্থ হয়ে পড়াও বিচিত্র নয়! বিশেষত যাঁরা ওবেসিটি বা ডায়াবেটিসের মতো সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের সব সময়ে সচেতন থাকা উচিত।
যাঁদের ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম আছে, বা প্রায়ই হজমের সমস্যা হয়, তাঁরাও একবার আমাদের এই লিস্টে চোখ বুলিয়ে নিন। কিছু কিছু খাবার একসঙ্গে খেলে শরীরের ভালোর চাইতে খারাপ বেশি হয়। তার চাইতেও বড়ো কথা হচ্ছে, স্থানীয় খাবার বা রান্নার কৌশলকে সব সময়ে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত—সেটাই আপনার শরীরের জন্য সেরা – ভিনদেশের খাবার এক-আধদিন খেলে অসুবিধে হয় না, তবে সেটাকে রোজের অভ্যেস বানিয়ে ফেলবেন না যেন!
খাবার আর জল
খেতে বসে জল খাবেন না – যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই অভ্যেস বদলান। অনেকে বলেন, খাওয়ার সময় গলা শুকিয়ে যায় — সেক্ষেত্রে খেতে বসার আগে জল খেয়ে নিন। খানিক পাতলা ডাল বা স্যুপ রাখুন সঙ্গে, সেটাও চুমুক দিয়ে খেতে পারেন তেষ্টা পেলে। আমরা যখন খাবার চিবোই, তখন মুখ, খাদ্যনালী ও পাকস্থলী থেকে নানা অ্যাসিড আর পাচক রস বেরোয়। তাদের মূল কাজ হচ্ছে খাবার হজমে সাহায্য করা। আপনি জল খেলেই সেই অ্যাসিড দ্রবীভূত হয়ে কার্যকারিতা হারাবে। ফলে খাবার হজম করতে সমস্যা হবে।
পিজা/পাস্তা/ বার্গার/ ন্যুডলসের সঙ্গে নরম পানীয়
হ্যাঁ, পিজা বা বার্গারের সঙ্গে সফট ড্রিঙ্কের গেলাসে চুমুক দেওয়াটা খুব কেতার ব্যাপার। বাচ্চারা টিভির বিজ্ঞাপনে দেখে তেমনটাই শিখে ফেলেছে। কিন্তু রিফাইন্ড ময়দা, নানা প্রিজারভেটিভ দেওয়া সস, প্রচুর চিজ বা তেল, প্রসেসড মাংসের সঙ্গে যখন আপনি অতিরিক্ত চিনি মেশানো কার্বোনেটেড পানীয় খাচ্ছেন তখন কী বিপুল ক্যালোরির চাপ পড়ছে আন্দাজও করতে পারবেন না!
বার্গারের সঙ্গে ফ্রাই অর্ডার করেন অনেকে – তা হলে তো কম্বিনেশন আরও মারাত্মক হয়ে ওঠে কারণ ফ্রাই ভাজার তেলটা বহুক্ষণ চড়া আঁচে থাকার ফলে তার গঠন পালটে যায়। মাঝে-সাঝে কখনও খেলে ঠিক আছে, প্রায়ই এ খাবার যাঁরা খাচ্ছেন, তাঁদের মেটাবলিক ডিসঅর্ডার হতে বাধ্য!
একসঙ্গে একাধিক প্রোটিন
সকালের ব্রেকফাস্টে দুধ, ডিম, বেকন, বেকড বিনস, টোস্ট খেতে ভালোবাসেন? মাঝে সাঝে এক-আধদিন চলতে পারে, তবে একসঙ্গে বিভিন্ন ধরনের প্রোটিন খেলে হজমের সমস্যা দেখা যায়। তার চেয়েও বড়ো কথা, সঙ্গে আবার পাউরুটি খেলে জটিলতা আরও বাড়বে – প্রোটিন হজম হতে এত বেশি সময় লাগবে যে কার্বোহাইড্রেট ততক্ষণে পেটের মধ্যে গেঁজিয়ে উঠতে পারে। ফলে পেট ভার লাগবে, গ্যাস হতে পারে।
এই একই কারণে মাংস আর দুধ একসঙ্গে খেলে হজম হতে চায় না। ফিশ ফ্রাই, মাটন, চিংড়ি মালাইকারি খেয়ে শরীর আইঢাই করার চাইতে বুঝেশুনে খাওয়া ভালো নয় কী?
ফল আর দই
দইয়ের প্রোটিন আর ফলের অ্যাসিড মিলে গ্যাস হওয়া বিচিত্র নয়। গরমের দিনে ফ্রুট স্যালাড বানিয়ে খেতে পছন্দ করেন অনেকেই। খুব টক ফল স্যালাডে দেবেন না, আর জল ঝরানো দই ফেটানোর সময়ে একটু দারচিনির গুঁড়ো মিশিয়ে নেবেন মনে করে। তাতে হজম ভালো হয়।