শরীরের পাশাপাশি মনে স্বাস্থ্য ভালো রাখার গুরুত্ব নিয়ে আমরা আজকাল আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন হয়ে উঠেছি। কিছুটা হলেও এর পিছনে সেলেব্রিটিদের একটা ভূমিকা আছে। বলিউডের দীপিকা পাড়ুকোন হোন বা অলিম্পিয়ান সিমোন বাইলস – সবাই প্রকাশ্যে স্বীকার করে নিয়েছেন মনোরোগের সঙ্গে তাঁদের লড়াইয়ের আখ্যান।
এই সমস্যায় যাঁরা ভোগেন, তাঁরা মন খারাপের অন্ধকারে ক্রমশ তলিয়ে যেতে আরম্ভ করেন, অধিকাংশ সময়েই খুব নিজের লোকের সঙ্গেও ভাগ করে নিতে পারেন না সে মলিনতা। ডিপ্রেশন চেপে রাখতে রাখতে রোগ ক্রমশ পেকে ওঠে, বিশেষ পরিস্থিতিতে মানুষ আত্মহত্যাপ্রবণও হয়ে উঠতে পারে।
জেনে নিন ঠিক কোন কোন লক্ষণগুলো দেখলে বুঝবেন যে সতর্ক হওয়ার সময় এসে গিয়েছে, তৎক্ষণাৎ দ্বারস্থ হোন চিকিৎসকের।
প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ঘুম পাবে: যদি দেখেন যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘুমোচ্ছেন, তা হলেও সতর্ক হোন। ডিপ্রেশনের অন্যতম লক্ষণ হচ্ছে বিছানা ছেড়ে না ওঠা এবং অতিরিক্ত ঘুম পাওয়া।
সারাদিন ক্লান্ত লাগবে, কিন্তু ঘুম হবে না ঠিকমতো: কখনও এমন হবে যে দিনভর হাড়ভাঙা খাটুনির পরেও ঘুম আসবে না, কখনও আবার এত ঘুমোবেন যে দৈনিক রুটিন তাতে ব্যাহত হবে। ডিপ্রেশন প্রথমেই আপনার এনার্জির ভাঁড়ারে থাবা বসাবে, যে যে কাজগুলো করতে একটা সময়ে ভালো লাগত, সেগুলো আর উপভোগ করবেন না এবং সারাদিন ক্লান্তিতে ভুগবেন।
নিরাশ লাগবে সারাক্ষণ: যে কোনও পরিস্থিতিতেই আগে নেগেটিভ চিন্তাভাবনা মাথায় আসবে। নিজেকে অসহায় মনে হবে, কোনও কাজই করতে ইচ্ছে হবে না, কারণ আপনার মাথায় সারাক্ষণ ব্যর্থতার চিন্তাভাবনাটাই ঘুরবে।
আবেগের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকবে না: কান্না, রাগ, বিরক্তি – কোনওটার উপরই নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবেন না। এই রাগ হবে, পরক্ষণেই কান্না পাবে। সোজা কথায়, সাঙ্ঘাতিক মুড সুইং হতে থাকবে।
আগে যে সব অ্যাক্টিভিটির সঙ্গে যুক্ত থাকতেন, সেগুলি আর আপনাকে আকর্ষণ করবে না: খেলাধুলো, গান শোনা, বন্ধুদের সঙ্গে সিনেমা বা নাটক দেখতে যাওয়ার নাম শুনলেই ক্লান্তি আসবে। উৎসাহ পাবেন না কিছুতেই। কোনও হবি বা বিনোদনই আপনাকে আর আকর্ষণ করবে না।
শরীরে অস্বস্তি বা ব্যথা–বেদনা বাড়বে: কোনও চোট-আঘাত বা অসুস্থতা ছাড়াই অদ্ভুত ব্যথা টের পাবেন শরীরে। কখনও মনে হবে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, বা গাঁটে-গাঁটে প্রচন্ড যন্ত্রণা হচ্ছে। পিঠে ব্যথা, ঘাড়ে-মাথায় কোনও কারণ ছাড়াই ব্যথা-বেদনার কমপ্লেনও ডিপ্রেশনের লক্ষণ হতে পারে।
নিজেকে ভালো লাগবে না: নিজের প্রতি বিতৃষ্ণা জন্মাবে। মনে হবে আপনি কোনও কর্মের নয়, ছোট ছোট ভুলের জন্যও নিজেকে ক্ষমা করতে পারবেন না।
খাওয়াদাওয়ার প্যাটার্নে ফারাক: কেউ কেউ ডিপ্রেশনের কবলে পড়ে প্রচুর খাওয়াদাওয়া আরম্ভ করেন, কেউ আবার একেবারেই ছেড়ে দেন। ফলে ওজনেও বিরাট পরিবর্তন আসতে আরম্ভ করে।
মনঃসংযোগে সমস্যা: মন দিয়ে কোনও কাজই করতে পারবেন না। ছোট ছোট বিষয় ভুলে যাবেন, ফলে কাজে ভুল-ভ্রান্তি বাড়বে। তেমন হলে আবার আরও দ্রুত বেগে অন্ধকূপে তলিয়ে যাবেন।
ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা বাড়বে: অত্যন্ত দ্রুতবেগে গাড়ি চালানো, জুয়া খেলা, নেশা বা বিপজ্জনক খেলাধুলোর প্রতি আকর্ষণ বাড়বে। নিজের ক্ষতির চিন্তা তুচ্ছ করেও খানিকক্ষণের উত্তেজনার জন্য এই ধরনের কাজের সঙ্গে আপনি যুক্ত হবেন।